আপডেট: সেপ্টেম্বর ১২, ২০২২
নিজস্ব প্রতিবেদক
জেলা পরিষদ নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেছে আওয়ামী লীগ। বরিশাল বিভাগের ৬ জেলার ৩টিতে মনোনয়ন পেয়েছে বর্তমান ও সাবেক জেলা চেয়ারম্যানরা। বাকি ৩টিতে এসেছে নতুন মুখ। গত কয়েকদিনের ঘটনা প্রবাহ বিশ্লেষণে একটি বিষয় পরিষ্কার যে বিভিন্ন আসনের এমপি ও প্রভাবশালী নেতাদের পছন্দের প্রার্থীরাই পেয়েছেন মনোনয়ন। সবচেয়ে আলোচিত ঘটনা ঘটেছে পিরোজপুরে। এখানে মনোনয়ন পেয়েছেন পৌর আওয়ামী লীগের সদস্য সালমা আক্তার। সাবেক এমপি এবং জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি একেএমএ আউয়ালের ছোট ভাইয়ের স্ত্রী সালমা আক্তারের স্বামী মজিবর রহমান খালেক পিরোজপুর সদর উপজেলার চেয়ারম্যান। সালমার আরেক ভাসুর হাবিবুর রহমান মালেক পিরোজপুর পৌরসভায় টানা ৪ মেয়াদ মেয়র হিসাবে আছেন।
বর্তমান জেলা পরিষদের প্রশাসক ও সাবেক চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন মহারাজের মনোনয়ন পাওয়ার বিষয়টি যেন ছিল অনেকটাই নিশ্চিত। জেলা পরিষদ নির্বাচনের ৭৪৭ ভোটারের ৭০৪ জনই মহারাজকে মনোনয়ন দেওয়ার অনুরোধ জানিয়ে চিঠি দিয়েছিল কেন্দ্রে। দলের জেলা সাংগঠনিক সম্পাদক এই নেতার পক্ষে সভা-সমাবেশও করেছিলেন তারা। তাছাড়া মহারাজ ছাড়া যে ৪ জন দলীয় মনোনয়ন চান তাদের প্রায় কারোরই ছিল না উল্লেখ করার মতো পদ-পদবি। এরমধ্যে আবার ৩ জন ছিলেন নারী। পরিস্থিতি যখন এমন ঠিক সেই সময় মনোনয়ন বোর্ড থেকে আসে মহারাজের মনোনয়ন না পাওয়ার ঘোষণা। মনোনয়ন পান সাবেক এমপি জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি একেএমএ আউয়ালের ভ্রাতৃবধূ সালমা আক্তার হ্যাপী।
স্বামী পিরোজপুর সদর উপজেলার চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান খালেকের সঙ্গে বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে দেখা গেলেও রাজনীতিতে তেমন সক্রিয় না থাকা সালমার মনোনয়ন পাওয়ার এই বিষয়টি এখন পিরোজপুরের টক অব দ্য টাউন। তাছাড়া যে পরিবারের একজন সাবেক এমপি ও দলের জেলা সভাপতি, একজন উপজেলা চেয়ারম্যান এবং একজন পৌর মেয়র বর্তমান সেই পরিবারেরই গৃহবধূকে জেলা চেয়ারম্যান পদে মনোনয়ন দেওয়ার পেছনের কারণ নিয়েও চলছে জল্পনা-কল্পনা।
আওয়ামী লীগের জাতীয় পরিষদ সদস্য এবং জেলা কমিটির উপদেষ্টা চণ্ডি চরন পাল বলেন, ‘বিষয়টিতে আমরাও অবাক হয়েছি। সালমা আক্তারকে মনোনয়ন দেওয়ার পেছনে একটি-ই কারণ থাকতে পারে। সর্বশেষ নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়ে জিতেছিলেন মহারাজ। দলীয় সিদ্ধান্ত ছিল কোনো বিদ্রোহী প্রার্থীকে মনোনয়ন না দেওয়ার। যে কারণে সদ্য সাবেক ১১ জেলা চেয়ারম্যান মনোনয়ন পাননি। মহারাজও হয়তো একই কারণে বাদ পড়েছেন। তবে এটা ঠিক যে নির্বাচন করলে মহারাজই জিতবেন।’ দলীয় সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে গিয়ে নির্বাচন করবেন কিনা জানতে চাইলে মহিউদ্দিন মহারাজ বলেন, ‘এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নেইনি। জাতির পিতার কন্যা প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার কাছে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আবেদন জানাচ্ছি। তিনি কি সিদ্ধান্ত দেন সেই অপেক্ষায় আছি।’