১৭ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শুক্রবার

শিরোনাম
তেলবাহী লড়ি উল্টে গিয়ে আগুন লেগে এক জনের মৃত্যু। ভূমি বিষয়ক তথ্যাদি স্কুলের পাঠ্যক্রমে অন্তর্ভুক্ত করার উদ্যোগ গ্রহণ করো হয়েছে-ভূমিমন্ত্রী মির্জা ফকরুলরা তারেক জিয়ার নির্দেশে জনগনের সাথে প্রতারনা ও তামশা করছে-আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বিগ বার্ড ইন কেইজ: ২৫ শে মার্চ রাতে বঙ্গবন্ধুর গ্রেফতার  ঢাবি ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগে ১ কোটি টাকার বৃত্তি ফান্ড গঠিত হাইকোর্টের রায়ে ডিন পদে নিয়োগ পেলেন যবিপ্রবির ড. শিরিন জয় সেট সেন্টার’ থেকে মিলবে প্রশিক্ষণ, বাড়বে কর্মসংস্থান: পীরগঞ্জে স্পীকার বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবস আগামীকাল টুঙ্গিপাড়ায় যাচ্ছেন রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী, সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন বিশিষ্ট রবীন্দ্র সংগীত শিল্পী সাদি মোহম্মদ আর নেই

বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচন মেয়র হতে চাচা-ভাতিজাসহ ৮ প্রার্থীর দৌড়ঝাঁপ

আপডেট: এপ্রিল ৯, ২০২৩

  • ফেইসবুক শেয়ার করুন

বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ঘোষণা দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে যে পাঁচটি সিটি করপোরেশনের নির্বাচন হবে, তার একটি বরিশাল সিটি। ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী আগামী ১২ জুন বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

নির্বাচন কেন্দ্র করে বিভিন্ন দলের মনোনয়ন প্রত্যাশীরা পাড়া-মহল্লা, বিভিন্ন সভা-সমাবেশ, ইফতারির আয়োজনে তাদের প্রচার-প্রচারণা শুরু করেছেন। পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতেও বিভিন্ন পোস্টার, ভিডিও, ছবি দিয়ে মনোনয়ন প্রত্যাশীরা দোয়া চাচ্ছেন।

তবে বিএনপির মতো বড় দল এ নির্বাচনে অংশ নেবে কি না, তা নিয়ে কৌতূহল আছে। দলটি যদি শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে অংশে নেয়ই, তাহলে মেয়র প্রার্থী কে হতে পারে, তা নিয়ে আলোচনা আছে রাজনৈতিক মহলে।

এদিকে বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচন কেন্দ্র করে সবার মুখে এখন চাচা-ভাতিজাকে নিয়ে আলোচনা। কে পাবেন মনোনয়ন এ নিয়েই চলছে সর্বমহলে কানাঘুষা। অর্থাৎ বর্তমান মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ এবং তার আপন চাচা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আপন ভাগ্নে আবুল খায়ের আবদুল্লাহ ওরফে খোকন সেরনিয়াবাতও নৌকা প্রতীকের দাবি করেছেন। তাই বরিশালবাসী এখন অধীর আগ্রহে রয়েছেন কে আসছেন এই নৌকার কাণ্ডারি হয়ে।

এদিকে চাচা-ভাতিজা ছাড়াও মহানগর যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক মাহমুদুল হক খান মামুন ও সরকারি ব্রজমোহন কলেজ ছাত্র সংসদের সাবেক ভিপি মো. মঈন তুষার নির্বাচন করবেন বলে প্রচার-প্রচারণা শুরু করেছেন।

বিভিন্ন সভা সমাবেশে মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ বলেন, আমার থেকে অন্য কেউ যোগ্যতাসম্পন্ন হলে অবশ্যই বরিশালের মানুষ তাকেই ভোট দেবে। আমি যদি বরিশালের মানুষের জন্য কাজ করে থাকি তাহলে অবশ্যই বরিশালের মানুষ সেটি বিবেচনা করে দেখবে। আমি চেষ্টা করে যাচ্ছি সেবাটা মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়ার জন্য। তা কতটুকু পেরেছি বরিশালের জনগণ বলতে পারবে। গতবারও মানুষের কাছে আমি দোয়া চেয়েছি, এবারও আমি মানুষের কাছে দোয়া চাইব।

বেশ কয়েক দিন ধরে সিটি মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ বরিশালে নেই। এ বিষয়ে তার ঘনিষ্ঠজন (নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক) বলেন, মেয়র মহোদয় কয়েক দিন ধরে বরিশালে নেই। তিনি এখন ঢাকায় অবস্থান করছেন। তার বাবা পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ কমিটির প্রধান ও সাংসদ আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ আছেন। তিনিসহ বরিশালে দলীয় নেতারা মনোনয়নের বিষয়টি দেখবেন।

এদিকে খোকন সেরনিয়াবাত বলেন, যদি জননেত্রী শেখ হাসিনা আমাকে মনোনয়ন দেন আমি সেই দায়িত্ব শতভাগ পালন করব। আমি রাজনৈতিক পরিবারের সন্তান। সে হিসেবে অবশ্যই মেয়র পদে মনোনয়ন চাইব। মানুষের জন্য কাজ করার সুযোগ পেলে শতভাগ সেবা দেওয়ার চেষ্টা করব।

এছাড়া বরিশাল সদর আসনের সংসদ সদস্য পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক শামীমের অনুসারী বরিশাল মহানগর যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক আলহাজ মাহমুদুল হক খান মামুনও মনোনয়ন চেয়ে এরই মধ্যে স্থানীয় পত্রিকাগুলোতে মেয়র প্রার্থিতার জানান দিয়ে বিজ্ঞাপন ছাপিয়েছেন। এছাড়া নগরীর বিভিন্ন স্থানে সভা-সমাবেশও করতে দেখা গেছে।

এ ব্যাপারে মাহমুদুল হক খান মামুন বলেন, নেত্রীর কাছে মনোনয়ন চাইব, সেভাবেই এগিয়ে যাচ্ছি। এরই মধ্যে নগরবাসীও জানেন আমি নির্বাচন করব। গত সাড়ে চার বছরে বরিশাল সিটি অনেক পিছিয়ে আছে। তাই বরিশাল নগরবাসীর সেবা করার জন্য জনগণ তাকে ভোট দেবেন।

আওয়ামী লীগের আরেক সম্ভাব্য প্রার্থী মো. মঈন তুষার বলেন, বিগত পাঁচ বছরেও নগরবাসীর আশা পূরণ করতে পারেনি বর্তমান মেয়র। জনগণ অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। জনগণের স্বার্থেই আমি নেত্রীর কাছে মনোনয়ন চাইব। আশা করি দুঃসময়ের পরীক্ষিত একজন ছাত্রনেতা হিসেবে নেত্রী আমার বিষয়টি বিবেচনা করবেন। জনগণের স্বার্থ রক্ষায় আমি নির্বাচনের শেষ পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যেতে চাই।

এদিকে রোববার (৯ এপ্রিল) সকালে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করে বরিশাল মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি জসিম উদ্দিন। তিনি বলেন, স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার অংশ হিসেবে বরিশাল সিটি করপোরেশনকে আধুনিক নগরী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে কাজ করতে চাই। তবে দলীয় মনোনয়ন না পেলে দলের সিদ্ধান্তের বাইরে স্বতন্ত্র প্রার্থী হবেন না বলেও জানান তিনি।

এদিকে আওয়ামী লীগের বাইরে জাতীয় পার্টি (জাপা), ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) হয়ে প্রার্থীতার জানান দিচ্ছেন অনেকে। বিএনপি যদি সিটি করপোরেশনের নির্বাচনে শেষ পর্যন্ত অংশ নেয়ই, তাহলে এবার মেয়র পদে দলে কে মনোনয়ন পাবেন, তা নিয়ে ধোঁয়াশার সৃষ্টি হয়েছে।

যদিও সাবেক মেয়র ও বিএনপি নেতা প্রয়াত আহসান হাবিব কামালের ছেলে কামরুল আহসান রূপন এ নির্বাচনে ভিন্ন এক চিন্তা থেকে প্রার্থী হওয়ার কথা জানিয়েছেন।

বরিশালের মানুষ উন্নয়ন ও পরিবর্তন চায় জানিয়ে রূপন বলেন, নিরপেক্ষ নির্দলীয় সরকার ছাড়া বর্তমান সরকারের আমলে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব না। কারণ এই সরকার দিনের ভোট রাতে করে কারচুপি করতে পারে। তবে আমি চাই এই নির্বাচনে অংশ নিতে।

বিএনপির সিটি নির্বাচনে অংশগ্রহণ নিয়ে কেন্দ্রীয় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক (বরিশাল বিভাগ) অ্যাড. বিলকিস জাহান শিরিন বলেন, এই সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনে অংশ নেবে না তাদের দল। বিগত দিনে উপজেলায় কোনো নির্বাচনে অংশ নেয়নি। কারণ হাসিনা সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন হবে না।

তিনি বলেন, এতো নির্যাতনের পরও দলের বাইরে কেউ যায়নি, সেখানে দলের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে কেউ নির্বাচনে অংশ নেবে না। আর বিএনপি এ নির্বাচনে প্রার্থী দেবে না বলেই এখন পর্যন্ত সিদ্ধান্ত রয়েছে।

অপরদিকে জাতীয় পার্টি (জাপা) থেকে আগে ভাগেই বরিশাল সিটি নির্বাচনে মেয়র প্রার্থী মনোনীত করা হয়েছে। সেই হিসেবে জাতীয় পার্টির যুগ্ম মহাসচিব ও জেলা সদস্যসচিব প্রকৌশলী ইকবাল হোসেন তাপসই হচ্ছেন প্রার্থী। যিনি গত নির্বাচনেও অংশ নিয়েছিলেন।

প্রকৌশলী ইকবাল হোসেন তাপস বলেন, নগরবাসীর সেবা করার জন্যই নির্বাচনে অংশ নিতে চাই। আমাকে দল আগাম মনোনায়ন দিয়েছে, নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে বিজয় সুনিশ্চিত। কারণ বরিশালের মানুষ উন্নয়ন চায়, আর বরিশালের উন্নয়নের জন্য আমি কাজ করতে চাই।

এসবের বাইরে গত সিটি নির্বাচনে আলোচনায় থাকা একমাত্র নারী প্রার্থী বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) বরিশাল জেলার সদস্য সচিব ডা. মনীষা চক্রবর্তী এবারেও প্রার্থী হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

তবে মনীষা চক্রবর্তী বলেন, আমাদের দল ঐক্যবদ্ধভাবে সিদ্ধান্ত নেয়, আমার একক কোনো সিদ্ধান্ত নেই। দল যা বলবে তাই। তবে নির্বাচনে জনগণ থাকবে কিনা, সেই বিষয়টি বিবেচনায় আমাদের নির্বাচনে অংশগ্রহণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। আর নির্বাচন কমিশন সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কোনো কিছুই দেখাতে পারেনি এখনো, সেক্ষেত্রে প্রহসনের নির্বাচনে অংশ নেওয়ার প্রশ্ন আসে না। নির্বাচন এখন নির্বাসনে গেছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

অপরদিকে বিগত নির্বাচনগুলোর মতো ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মেয়র প্রার্থীরাও বিভিন্ন সিটি নির্বাচনী মাঠে থাকবে বলে জানিয়েছেন। কেন্দ্রীয় কমিটির নায়েবে আমির- মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করিম, প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন, বরিশাল জেলা সভাপতি মুফতি সৈয়দ এছহাক মুহাম্মাদ আবুল খায়েরসহ তিনজনের মধ্যে যে কেউ বরিশাল সিটি নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারেন বলে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় প্রচার ও মিডিয়া উপ-কমিটির সদস্য কে এম শরীয়াতুল্লাহ।

বরিশাল নির্বাচন কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, বরিশাল সিটি করপোরেশনে হালনাগদ ভোটার সংখ্যা ২ লাখ ৭৫ হাজার ১৭৭ জন।

সূএঃঢাকা মেইল

  • ফেইসবুক শেয়ার করুন
     
Website Design and Developed By Engineer BD Network