আপডেট: মে ১০, ২০২০
জি.এম রিপন,বানারীপাড়া ঃ
বানারীপাড়ায় করোনার উপসর্গ নিয়ে মৃত ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তার পিএস মো.ছিদ্দিকুর রহমান (৫৩) ও বাইশারী এলাকার মুধি দোকানী আনোয়ার হোসেন (৪৫)’র টেস্ট রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে। এদের মধ্যে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তার পিএস মো.ছিদ্দিুর রহমানের মৃত্যুর আগে ও মৃত্যুর পরে পৃথক ভাবে দু’দফা করোনা টেস্টে রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে বলে জানা গেছে। এছাড়া বাইশারী গ্রামের মুধি দোকানী আনোয়ার হোসেনের মৃত্যুর পর তার করোনা টেস্ট রিপোর্টও নেগেটিভ এসেছে বলে শনিবার উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরীকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার মো. কবির হাসান যুগান্তরকে জানিয়েছেন।
অপরদিকে জ¦র ও শ^াশ কষ্ট নিয়ে মৃত ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তার পিএস মো.ছিদ্দিকুর রহমানের কফিন বানারীপাড়ায় তার গ্রামের বাড়িতে নিয়ে আসার খবর ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয় কতিপয় যুবক প্রথমে তার করোনা সন্দেহে এলাকায় লাশ প্রবেশ করতে আপত্তি জানান। পরে খবর পেয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান গোলাম ফারুক স্থানীয় ওই যুবকদের সান্ত করেন। এসময় তিনি ছিদ্দিকুর রহমানের কফিন তার গ্রামের বাড়ি দত্তপাড়া গ্রামে প্রবেশ করার পাশাপাশি লাশ দাফন করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেণ।
এব্যাপারে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তার পিএস মো.ছিদ্দিকুর রহমানের ছোট ভাই বিআরডিবির মাঠ কর্মকর্তা আতিকুর রহমান বেলায়েত যুগান্তরকে জানান, তার বড় ভাই ছিদ্দিকুর রহমান দীর্ঘ দিন ধরে ঢাকার মিরপুর-১ নিজ বাসায় জ¦র ও শ^াশ কস্টে আক্ত্রান্ত হয়ে মঙ্গলবার রাতে ইন্তেকাল করেন। এর আগে রোববার তার করোনা সন্দেহে ঢাকা মহানগর হাসপাতালে প্রথম ও মারা যাওয়ার পর বুধবার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দ্বিতীয় টেস্ট করেণ। সেখানে পৃথক ভাবে তার দু’টি টেস্ট রিপোর্টই নেগেটিভ এসেছে বলে বেলায়েত জানান। এর পর বুধবার রাতে কতিপয় যুবক তার বড় ভাই ছিদ্দিকুর রহমানের কফিন নিয়ে এলাকায় প্রবেশ করতে দিবে না বলে স্থানীয় কতিপয় যুবক ঘোষনা করেণ। এসময় তারা পরিবারীক ভাবে ওই বিষয়টি উপজেলা চেয়ারম্যান গোলাম ফারুককে জানান। তিনি খবর পেয়ে ওই রাত্ইে স্থানীয় যুবকদের সান্ত করেণ। পরে বৃহস্পতিবার ভোর রাত সাড়ে ৩টায় পুলিশ পাহারায় ছিদ্দিকুর রহমানের কফিন বানারীপাড়ার দত্তপাড়া গ্রামের নিজ বাড়িতে নিয়ে আসা হয়। এসময় থানা পুলিশ ও ইসলামী ফাউন্ডেশনের কর্মীরা ওই রাতেই সরকারী নিয়ম অনুযায়ী সংক্ষিপ্ত জানাজা শেষে তার কফিন পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করেন। এসময় ঢাকা থেকে ছিদ্দিকুর রহমানের কফিনের সাথে অপর একটি মাইক্রোবাসে আসা তার স্ত্রী রোজিনা আক্তার নুপুর ও দুই ছেলে রিফাত রহমান এবং আব্দুর রহমানকে ইসলামী ফাউন্ডেশনের কর্মীরা গাড়ি থেকে নামতে বারণ করেণ। ছিদ্দিকুর রহমানের কফিন দাফনের পর তার স্ত্রী ও দুই সন্তান পূনরায় সেই মাইক্রোবাসেই ঢাকার বাসায় ফিরে যান বলে বেলায়েত জানান।
এদিকে উপজেলার বাইশারী বেলী ব্রিজের ডালে মুধি দোকানী শহিদুল ইসলাম জানান, তার পাশর্^বর্তী মুধি দোকানী মো.আনোয়ার হোসেন (৪৫) দীর্ঘ দিন ধরে শ^াশ কষ্ট ও স্বর্দ্বী-কাসিতে ভূগছিলেন। সে বৃহস্পতিবার ভোরে রোজা রাখা অবস্থায় ফজরের নামাজ পড়ে দোকান খুলে প্রায় দুই ঘন্টা ধরে বিকীকিনী করেণ। এসময় সে হটাৎ করে শ^াশ কষ্ট বেড়ে অসুস্থ হয়ে পড়ন। তার এ অবস্থা দেখে পাশের দোকানী শহিদুল ইসলাম তাৎক্ষণিক আনোয়ার হোসেনের বাড়িতে খবর দেন। খবর পেয়ে বাড়ি থেকে তার পরিবারের লোকজন দোকানে এসে আনোয়ারকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানে কর্তব্যরত ডাক্তার কবির হাসান তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালের করেনা ইউনিটে রেফার করেণ। এদিন বেলা সাড়ে ১১টায় সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষনা করেণ। এসময় সেখানে আনোয়ার হোসেনের করোনা পরীক্ষার জন্য নমূনা সংগ্রহ করা হয় বলে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরীকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার কবির হাসান যুগান্তরকে জানান। পরে ওই দিন বিকেল ৪টায় তার নেতৃত্বে পুলিশ পাহারায় আনোয়ারের মরদেহ বরিশাল শেবাচিম হাসপাতাল থেকে বাইশারী গ্রামের বাড়িতে পৌছে দেয়া হয়। সেখানে সরকারী নিয়ম অনুযায়ী পুলিশ ও ইসলামী ফাউন্ডেশনের কর্মীরা সংক্ষিপ্ত জানাজা শেষে আনোয়ারের লাশ পারিবারিক কবস্থানে দাফন করা হয়। শনিবার তার টেস্ট রিপোর্ট নেগেটিভ এসছে বলে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরীকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার কবির হাসান যুগান্তরকে জানান। তিনি আরও জানান, যারা শ^দ্বী-জ¦র, কাসি ও শ^াশ কষ্টে আক্রান্ত হন, তাদেরকে আমরা প্রাথমিক ভাবে করোনার উপসর্গ বলে সন্দেহ করে থাকি এবং তাদের নমূনা সংগ্রহ করে টেস্ট রিপোর্টের জন্য বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে পাঠাই। সেখান থেকে টেস্ট রিপোর্ট আসার পরেই এব্যাপারে আমরা নিঃশ্চিত হতে পারী বলে তিনি জানান। ##