আপডেট: ডিসেম্বর ২২, ২০১৯
নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদে উত্তাল ভারতের উত্তরপ্রদেশ। এই রাজ্যে বাড়ছে নিহতের সংখ্যা। গত তিনদিনের সংঘর্ষে ওই রাজ্যে মোট ১৬ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে ৮ বছরের একটি শিশুর মৃত্যু হয়েছে নরেন্দ্র মোদির নির্বাচনী কেন্দ্র বারাণসীতে। গতকাল পুলিশ লাঠি চালানোর সময়ে পাশের গলিতে বন্ধুদের সঙ্গে খেলছিল সে। হুড়োহুড়িতে পদপিষ্ট হয়ে গুরুতর আঘাত পেয়েছিল মোহাম্মদ সাগির নামে শিশুটি। হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়।
আজ উত্তরপ্রদেশের কানপুর ও রামপুরে বড়সড় সংঘর্ষ হয়েছে। বিহারে ঝামেলা হয়েছে আরজেডি-র বন্ধকে ঘিরে। রেল ও রাস্তা অবরোধ হয়েছে, ভাঙচুর হয়েছে গাড়ি। বিক্ষোভ হয়েছে মধ্যপ্রদেশ, তামিলনাড়ু ও কেরালেও। তবে আসামে শান্তি ফিরছে। মেঙ্গালুরুতে পুলিশের গুলিতে নিহতদের পরিবারের সঙ্গে আজ দেখা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী বি এস ইয়েদুরাপ্পা।
উত্তরপ্রদেশ পুলিশের ডিজি ও পি সিংহ এখনও বলছেন, তাঁরা গুলি চালাননি। তাঁর বক্তব্য, সব ক’টি মৃত্যুই হয়েছে গুলি-বিনিময়ের মধ্যে পড়ে। ময়না-তদন্তেই তা স্পষ্ট হবে। আমাদের গুলিতে কেউ মারা গেলে বিচার বিভাগীয় তদন্ত করিয়ে ব্যবস্থা নিতাম।’’ তা-হলে গুলি চালাল কে? মনে করা হচ্ছে, গুলিবিদ্ধ হয়ে যে মৃত্যুগুলি ঘটেছে, সেই গুলি বিক্ষোভকারীরাই ছুড়েছেন বলে ইঙ্গিত করেছেন ডিজি। আইজি (আইন-শৃঙ্খলা) প্রবীণ কুমার জানান, সারা রাজ্যে বিক্ষোভের এলাকা থেকে ৪০৫টি কার্তুজের খোল মিলেছে। ২৬৩ জন আহত পুলিশের মধ্যে ৫৭ জনের শরীরে গুলির আঘাত রয়েছে।
প্রতিবাদীরা নারী ও শিশুদের ঢাল হিসেবে ব্যবহার করছে বলে ডিজি-র অভিযোগ। তিনি বলেন, লখনউয়ে আমি মেয়েদের বিক্ষোভ ছেড়ে চলে যেতে বলেছিলাম। বারাণসীতে বাচ্চারা ছিল। যারা নাগরিকত্ব আইনের মানেই জানে না, তারাও হাতে পাথর তুলে নিয়েছে।
কানপুরে আজ এতিমখানা ফাঁড়িতে আগুন লাগায় জনতা। তাদের ছোড়া ইটে আহত হন পুলিশকর্মীরা। লাঠি ও কাঁদানে গ্যাস চালায় পুলিশ। সমাজবাদী পার্টির দুই নেতা অমিতাভ বাজপেয়ী এবং কমলেশ তিওয়ারিকে গ্রেফতার করা হয়। রামপুরে আজ ছিল বন্ধ। পুলিশের অভিযোগ, ১২ থেকে ১৮ বছরের কিশোরদের সঙ্গে নিয়ে ৪০০-৫০০ জনের একটা ভিড় শহরের ইদগা এলাকায় পুলিশকে পাথর ছুড়তে শুরু করে। সংঘর্ষে বেশ কয়েক জন পুলিশ ও বিক্ষোভকারী আহত হন। গোটা উত্তরপ্রদেশে ১৪৪ ধারা বলবৎ রাখা হচ্ছে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত। রাজ্য জুড়ে গুরুতর অপরাধের অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৭০৫ জনকে। সমাজমাধ্যমে আপত্তিকর পোস্টের অভিযোগে ধৃত আরও ১০২ জন। আটক প্রায় ৪৫০০।