আপডেট: মে ১, ২০২০
দিবসটি উপলক্ষে সংবাদপত্রগুলো বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ করেছে।
টেলিভিশন এবং রেডিও বিশেষ অনুষ্ঠান প্রচার করছে। মহাবিপর্যয় বয়ে আনা করোনাভাইরাসের কারণে এবার ভিন্নভাবে পালিত হচ্ছে মহান মে দিবস।
আজ সরকারি ছুটির দিন।
প্রতিবার রাষ্টীয়ভাবে দিবসটি পালন উপলক্ষে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করলেও এবার করোনার কারণে কোনো কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়নি।
ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টি প্রতিবারই এই দিনটিতে বড় বড় শ্রমিক সমাবেশের আয়োজন করলেও এবার করোনার কারণে সকল সমাবেশের কর্মসূচি বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন।
রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ তার বাণীতে বলেন, মহান মে দিবস সারাবিশ্বের শ্রমজীবী মানুষের ঐক্য ও সংহতির প্রতীক।
রাষ্ট্রপতি বলেন, বাংলাদেশের মতো শ্রমনিবিড় উন্নয়নশীল দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে শ্রমিক ও মালিকের মধ্যে পারস্পরিক সমঝোতা ও হৃদ্যতা বজায় রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আজীবন মেহনতি মানুষের অধিকার আদায়ের জন্য রাজপথে লড়াই সংগ্রাম করেছেন।
এসব উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডের সুফল শ্রমজীবী মানুষ পেতে শুরু করেছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার শ্রমজীবী মানুষের কল্যাণে লাগসই প্রযুক্তির উদ্ভাবন ও ব্যবহার এবং উন্নত ব্যবস্থাপনা বাস্তবায়নে বদ্ধপরিকর।
মহান মে দিবসের এই দিনে চলমান সংকটে কর্মহীন, খেটে খাওয়া, শ্রমজীবী মেহনতি মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য সমাজের সকল বিত্তবান ও স্বচ্ছল মানুষদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ।
বৃহস্পতিবার দেয়া এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়।
একই সঙ্গে করোনা সংকটের এই সময়ে শ্রমিকদের মধ্যে স্বাস্থ্য সচেতনতা তৈরি ও সাধারণ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার মতো নিরাপদ ও স্বাস্থ্যসম্মত কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করার জন্য শিল্প মালিকদের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে।
করোনাভাইরাস সংক্রমণের বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে নিজ নিজ অবস্থানে থেকেই মহান মে দিবস পালন করার আহ্বান জানিয়েছে শ্রমিক কর্মচারী ঐক্য পরিষদ (স্কপ)।
বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক এক ভিডিও বার্তায় মহান মে দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশের শ্রমিক শ্রেণিসহ শ্রমজীবী-মেহনতি মানুষকে অভিনন্দন জানিয়েছেন।
১৮৮৬ সালের এই দিনে শ্রমিকরা আট ঘণ্টা কাজের অধিকারের দাবিতে যুক্তরাষ্ট্রের সব শিল্প এলাকায় ধর্মঘটের ডাক দিয়েছিলেন।
আন্দোলন চলাকালে শিকাগোর হে মার্কেটের সামনে বিশাল শ্রমিক জমায়েতে পুলিশের গুলিতে প্রাণ হারান ১১ শ্রমিক।
এরপরই যুক্তরাষ্ট্র ছাড়িয়ে ওই শ্রমিক বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে গোটাবিশ্বে।
গড়ে ওঠে শ্রমিক-জনতার বৃহত্তর ঐক্য।
তীব্র আন্দোলনের মুখে শ্রমিকদের দৈনিক আট ঘণ্টা কাজের দাবি মেনে নিতে বাধ্য হয় যুক্তরাষ্ট্র সরকার।
অধিকার আদায়ে শ্রমিকদের আত্মত্যাগের স্মরণে ১৮৮৯ সালে প্যারিসে অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক শ্রমিক সম্মেলনে দিনটিকে ‘মে দিবস’ হিসেবে পালনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
সেই ধারাবাহিকতায় বিশ্বের সব দেশেই দিবসটি পালন করা হয়।