২১শে মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, মঙ্গলবার

শিরোনাম
তেলবাহী লড়ি উল্টে গিয়ে আগুন লেগে এক জনের মৃত্যু। ভূমি বিষয়ক তথ্যাদি স্কুলের পাঠ্যক্রমে অন্তর্ভুক্ত করার উদ্যোগ গ্রহণ করো হয়েছে-ভূমিমন্ত্রী মির্জা ফকরুলরা তারেক জিয়ার নির্দেশে জনগনের সাথে প্রতারনা ও তামশা করছে-আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বিগ বার্ড ইন কেইজ: ২৫ শে মার্চ রাতে বঙ্গবন্ধুর গ্রেফতার  ঢাবি ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগে ১ কোটি টাকার বৃত্তি ফান্ড গঠিত হাইকোর্টের রায়ে ডিন পদে নিয়োগ পেলেন যবিপ্রবির ড. শিরিন জয় সেট সেন্টার’ থেকে মিলবে প্রশিক্ষণ, বাড়বে কর্মসংস্থান: পীরগঞ্জে স্পীকার বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবস আগামীকাল টুঙ্গিপাড়ায় যাচ্ছেন রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী, সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন বিশিষ্ট রবীন্দ্র সংগীত শিল্পী সাদি মোহম্মদ আর নেই

আমতলীতে সবুজ বেষ্টনীর গাছ কেটে উজাড় : স্ব-মিল থেকে গাছ জব্দ

আপডেট: মে ১৩, ২০২০

  • ফেইসবুক শেয়ার করুন

আমতলী (বরগুনা) প্রতিনিধি।
বরগুনার আমতলী উপজেলা হলদিয়া ইউনিয়নের দক্ষিণ তক্তাবুনিয়া গ্রামের বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধে বন বিভাগের সৃজিত সবুজ বেষ্টুনীর গাছ কেটে সাবাড় করে দিচ্ছে বনদস্যুরা। এতে উজাড় হচ্ছে রাস্তার দু’পাশের বৃহৎ ও মুল্যবান গাছ। বন বিভাগ কর্তৃপক্ষকে জানালেও তারা কোন ব্যবস্থা নিচ্ছে না এমন অভিযোগ স্থানীয়দের।
জানাগেছে, ১৯৬৭ সালে পানি উন্নয়ন বোর্ড হলদিয়া ইউনিয়নকে বন্যা জলোচ্ছাস ও নদীর ভাঙ্গণ থেকে রক্ষায় বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধ নির্মাণ করে। ১৯৮৮ সালে বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধের দুই পাশে বন বিভাগ সবুজ বেষ্টনীর প্রকল্পের আওতায় সামাজিক বনায়নের মাধ্যমে আকাশ মনি, শিশু, বাবল ও জিলাপিসহ বিভিন্ন প্রজাতির গাছ রোপন করে। ওই গাছ বর্তমানে বৃহৎ গাছে পরিনত হয়েছে। গাছ বড় ও মুল্যবান হওয়ার গাছের দিকে লোলুপ দৃষ্টি পড়ে স্থানীয় বন খেকোদের। বন কর্তৃপক্ষের উদাসীনতায় প্রকাশ্যে ও রাতের আধারে প্রায়ই ওই গাছ কেটে নিয়ে যাচ্ছে স্থানীয় বনদস্যুরা। গত এক মাস ধরে বনদস্যুরা ওই বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধের গাছ কেটে নিয়ে যাচ্ছে। অভিযোগ রয়েছে বন বিভাগের লোকজনের সহযোগীতায়ই স্থানীয় হারুন ডাকুয়া, লাল মিয়া ডাকুয়া,মনিরুল ডাকুয়া, সোহাগ ডাকুয়া, মকবুল ডাকুয়া ও সোনা ডাকুয়াসহ ওই এলাকার লোকজন গত এক মাসে বাবল, আকাশমনি, জেলাপি ও শিশুসহ অন্তত দুই শতাধিক কেটে নিয়ে গেছে। যার আনুমানিক মুল্য কয়েক লক্ষ টাকা। বনদস্যুরা ওই গাছ কেটে স্থানীয় রিন্টু আকনের স্ব-মিলে নিয়ে রেখেছে। বন বিভাগ কর্তৃপক্ষকে জানালেও তারা গুরুত্ব দিচ্ছে না। বনদস্যুদের সাথে রয়েছে বন বিভাগের লোকজনের সখ্যতা এমন অভিযোগ স্থানীয়দের। এ ঘটনার ওই এলাকার ছত্তার প্যাদা সার্কেল এএসপি সৈয়দ রবিউল ইসলামের কাছে অভিযোগ করেন। ওই আবেদনের প্রেক্ষিতে এএসপি ঘটনা তদন্তে আমতলী থানার এসআই শুভ বাড়ৈইকে নির্দেশ দিয়েছেন। আমতলী থানার এসআই শুভ বাড়ৈই মঙ্গলবার রাতে স্ব-মিল থেকে ১০ পিস গাছ ও কিছু চেরাই কাঠ জব্দ করেছে। পরে ওই গাছ স্থানীয় জুয়েল মল্লিকের জিম্মায় রেখে আসেন।
বুধবার সরেজমিনে গিয়ে দেখাগেছে, হলদিয়া ইউনিয়নের দক্ষিণ তক্তাবুনিয়া এলাকায় বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধের পাশের সবুজ বেষ্টনীর বৃহৎ ও মুল্যবান বিভিন্ন প্রজাতির গাছ কেটে নিয়ে গেছে। গাছের গোড়ালি ও ডালপালা পড়ে আছে।
স্থানীয় ইব্রাহিম প্যাদা, রশিদ মৃধা ও কামাল উদ্দিন বলেন, প্রকাশ্যে দিবালোকে হারুন ডাকুয়ার নেতৃত্বে তার লোকজন গাছ কেটে নিয়ে গেছে।
নিজাম হাওলাদার ও সবুজ প্যাদা বলেন, হারুন ডাকুয়া ও তার লোকজনসহ এলাকার অনেকে প্রতিবছর গাছ কেটে নিয়ে যাচ্ছে। এর প্রতিবাদ করলে উল্টো তাকে তারা হয়রানী করে থাকেন। বন বিভাগের লোজনকে জানালে তারা কোন ব্যবস্তা নিচ্ছে না।
স্ব-মিল মালিক রিন্টু আকন বলেন, হারুন ডাকুয়া বন বিভাগের আকাশ মনি, রেইন্টি ও জেলাপিসহ বিভিন্ন প্রজাতির ৪৫-৫০ সিএফটি গাছ আমার স্ব-মিল থেকে কেটে নিয়েছে। তিনি আরো বলেন ওই গাছেরই কিছু গাছ পুলিশ জব্দ করেছে।
জিম্মাদার মোঃ জুয়েল মল্লিক বলেন, বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধের কিছু গাছ পুলিশ জব্দ করে আমার জিম্মায় রেখে গেছেন। আমি ওই গাছ একটি ঘরে তালা দিয়ে রেখেছি।
অভিযুক্ত হারুন ডাকুয়া বন বিভাগের গাছ কাটার কথা অস্বীকার করে বলেন, আমার বাড়ীর গাছ আমি স্ব-মিলে চেরাই করতে নিয়েছি। ওই গাছ পুলিশ জব্দ করেছে।
আমতলী থানার এসআই শুভ বাড়ৈই বলেন, বন্যা নিয়ন্ত্রন বাধের দু’পাশের গাছ কেটে নিয়ে যাচ্ছে বনদস্যুরা। ওই গাছের কিছু গাছ একটি স্ব-মিল থেকে জব্দ করে স্থানীয় জুয়েল মল্লিকের জিম্মায় দিয়ে এসেছি।
আমতলী বন কর্মকর্তা ফিরোজ কবির বলেন, নতুন গাছ কাটার বিষয়টি আমি জানিনা। তবে গাছ কাটার খবর পেয়ে আমি গত দুইদিন আগে ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম। ওইখানে নতুন কোন গাছ কাটা নেই। পুরাতন কিছু গাছ কেটে নিয়েছে তার ডালপাল পড়ে আছে। স্ব-মিলে থাকা গাছের মালিক মোঃ হারুন ডাকুয়ার পক্ষ নিয়ে তিনি বলেন, সাত-আট মাস আগের কাটা ওই গাছগুলো তার বাড়ীর।
পটুয়াখালী ডিএফও আমিনুল ইসলাম বলেন, নতুন গাছ কাটার বিষয়টি খতিয়ে দেখতে বন বিভাগের লোক পাঠানো হবে। তদন্ত অনুসারে যারা গাছ কেটেছে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মনিরা পারভীন বলেন, সরকারী গাছ যারা কেটেছে তদন্ত সাপেক্ষে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

  • ফেইসবুক শেয়ার করুন
     
Website Design and Developed By Engineer BD Network