আপডেট: আগস্ট ২২, ২০২১
গৌরনদী প্রতিনিধি :
মূল পর্চাকে কম্পিউটারের মাধ্যমে এডিট করে জমির পরিমান বেশি দেখিয়ে আদালতের নির্দেশ উপেক্ষা করে বিরোধীয় জমি দলিল রেজিষ্ট্রি করা হয়েছে। চলতি বছরের ২৭ জুন বরিশালের গৌরনদী সাব-রেজিষ্ট্রি অফিসে দলিলটি সম্পন্ন করা হয়। অতি সম্প্রতি বিষয়টি এলাকায় চাউর হওয়ায় জনসাধারনের মাঝে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। বিরোধীয় জমি ভূয়া পর্চায় দলিল সম্পাদন হওয়ায় সচেতন নাগরিক মহলে নানান প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
এ ঘটনায় দক্ষিণ বিজয়পুর এলাকার মোসাঃ আছিয়া নামের এক নারী জাল-জালিয়াতি চক্রকে আইনের আওতায় এনে শাস্তির দাবীতে জেলা প্রশাসকসহ প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন।
ওই নারীর লিখিত অভিযোগ, দলিলের নকল ও অন্যান্য সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার আশোকাঠী গ্রামের আব্দুস সালাম বাবুলের স্ত্রী হিরন নাহার চলতি বছরের ২৭ জুন গৌরনদী সাব-রেজিষ্ট্রি অফিসে একখানা দলিল সম্পাদন করেন। যার নং ২১৫১/২১। দলিল দাতা একই উপজেলার দক্ষিণ পালরদী গ্রামের কেশব চক্রবর্তীর দুইপুত্র সুভাষ চক্রবর্তী, বিজয় চক্রবর্তী এবং ঋষিকেশ চক্রবর্তীর পুত্র গৌরঙ্গ চক্রবর্তী ও বিশ্বনাথ চক্রবর্তী।
সূত্রে আরও জানা গেছে, দক্ষিণ পালরদী মৌজার ৩৮৭ নং খতিয়ানের ২৬৫ নং দাগের বিএস মূল পর্চায় চারজন দলিল দাতাদের নামে ০.১৪৬ শতক জমি থাকলেও কম্পিউটারের মাধ্যমে মূল পর্চাকে এডিট করে ভূয়া পর্চা বানিয়ে বেশি জমি দেখিয়ে দলিল গ্রহিতা হিরন নাহারের নামে ছয় শতক জমি রেজিষ্ট্রি করা হয়েছে।
দক্ষিণ পালরদী গ্রামের আব্দুর রব মিয়ার পুত্র মেহেদী মিয়া জানান, বিক্রিত জমি নিয়ে আদালতে দুইটি মামলা চলমান আছে। এমনকি বিরোধীয় জমিতে ১৪৪ ধারা জারি করেছেন আদালত। এরপরও দলিল গ্রহিতা ও দলিল দাতাগণ আদালতের নির্দেশ উপেক্ষা করে জমি রেজিষ্ট্রি করিয়েছে।
এবিষয়ে দলিল দাতা গৌরঙ্গ চক্রবর্তী জানান, স্থানীয় কাউন্সিলরের ভাই নুর ইসলাম বেপারীসহ একটি মহল তাদের সাথে প্রতারনা করে দলিলটি করে নিয়েছে। জাল-জালিয়াতির সাথে তাদের কোন সম্পৃক্ততা নেই। এবিষয়ে দলিল গ্রহিতা হিরন নাহারের কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি। এবিষয়ে দলিল লেখক মজনু তালুকদার জানান, দলিল দাতা-গ্রহিতা যে কাগজ জমা দিয়েছেন সে অনুযায়ী তিনি দলিলটি লিখেছেন। জাল-জালিয়াতির বিষয়টি তার জানা নেই। এমনকি সাব-রেজিষ্ট্রি অফিস থেকে তার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
এবিষয়ে উপজেলা সাব রেজিষ্ট্রার মোবাশ্বেরা সিদ্দিকা জানান, ভূয়া কাগজ দিয়ে দলিল করা সম্ভব নয়। আমার কাছে যে কাগজ সাবমিট করা হয়েছে সেই কাগজ অনুযায়ী দলিলে স্বাক্ষর করা হয়েছে। এক্ষেত্রে আমার কোন দায়বদ্ধতা নেই। তারপরও বিষয়টি জানার পরপরই দলিল লেখকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।