১৯শে মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, রবিবার

শিরোনাম
তেলবাহী লড়ি উল্টে গিয়ে আগুন লেগে এক জনের মৃত্যু। ভূমি বিষয়ক তথ্যাদি স্কুলের পাঠ্যক্রমে অন্তর্ভুক্ত করার উদ্যোগ গ্রহণ করো হয়েছে-ভূমিমন্ত্রী মির্জা ফকরুলরা তারেক জিয়ার নির্দেশে জনগনের সাথে প্রতারনা ও তামশা করছে-আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বিগ বার্ড ইন কেইজ: ২৫ শে মার্চ রাতে বঙ্গবন্ধুর গ্রেফতার  ঢাবি ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগে ১ কোটি টাকার বৃত্তি ফান্ড গঠিত হাইকোর্টের রায়ে ডিন পদে নিয়োগ পেলেন যবিপ্রবির ড. শিরিন জয় সেট সেন্টার’ থেকে মিলবে প্রশিক্ষণ, বাড়বে কর্মসংস্থান: পীরগঞ্জে স্পীকার বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবস আগামীকাল টুঙ্গিপাড়ায় যাচ্ছেন রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী, সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন বিশিষ্ট রবীন্দ্র সংগীত শিল্পী সাদি মোহম্মদ আর নেই

জেন্ডার ভিত্তিক সহিংসতা মোকাবিলায় দক্ষতা বৃদ্ধি প্রশিক্ষণ কর্মশালা

আপডেট: আগস্ট ২২, ২০২১

  • ফেইসবুক শেয়ার করুন

নারীর প্রতি সহিংসতা বা নারীর বিরুদ্ধে সহিংসতা হচ্ছে সহিংস অপরাধগুলো যেগুলো প্রধাণত বা কেবলই নারী বা বালিকাদের উপরেই করা হয়। এরকম সহিংসতাকে প্রায়ই ঘৃণাপূর্বক অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হয় । যা নারী বা বালিকাদের উপর করা হয় কেননা তারা নারী। নারীর প্রতি সহিংসতার খুব লম্বা ইতিহাস রয়েছে, যদিও এরকম সহিংসতার মাত্রা বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ছিল, এমনকি আজও বিভিন্ন সমাজে এগুলোর মাত্রা ও ঘটনার ধরন বিভিন্ন হয়। এরকম সহিংসতাকে প্রায়ই নারীকে সমাজে বা আন্তঃব্যক্তি সম্পর্কে অধীনস্থ করার কৌশল হিসেবে ব্যবহৃত হয়। ব্যক্তি তার অধিকারপ্রাপ্তির বোধ, উচ্চস্থানের বোধ, নারীবিদ্বেষ, বা নিজের সহিংস প্রকৃতির জন্য নারীর প্রতি সহিংস আচরণ করতে পারেন।জাতিসংঘের ডেকলারেশন অন দ্য ডেকলারেশন অফ ভায়োলেন্স এগেইনস্ট উইমেন থেকে বলা হয়, “সহিংসতা হচ্ছে নারীর বিরুদ্ধে নারী ও পুরুষের মধ্যকার ঐতিহাসিক অসম ক্ষমতা সম্পর্কের প্রকাশ” এবং “নারীর বিরুদ্ধে সহিংসতা হচ্ছে প্রধান সামাজিক কৌশলগুলোর মধ্যে একটি যার দ্বারা নারীদেরকে পুরুষের তুলনায় অধীনস্থ অবস্থানে জোরপূর্বক নিয়ে যাওয়া হয়”।নারীর প্রতি সহিংসতাকে কয়েকটি বৃহৎ শ্রেণীতে ভাগ করা যায়। এগুলোর মধ্যে “ব্যক্তির” দ্বারা সহিংসতা ও “রাষ্ট্রের” দ্বারা সহিংসতা উভয়ই রয়েছে। সহিংসতার কোন কোন ধরন আছে যা ব্যক্তির দ্বারা ঘটে যথা – ধর্ষণ, গৃহ নির্যাতন, যৌন হয়রানি, প্রজননগত জোর-জবরদস্তি, কণ্যা শিশুহত্যা, লিঙ্গভিত্তিক গর্ভপাত, প্রসবকালীন সহিংসতা, উচ্ছৃঙ্খলা জনতার দ্বারা সহিংসতা বা দাঙ্গা, রীতি বা আচারগত চর্চা যেমন সম্মান রক্ষার্থে হত্যা বা অনর কিলিং, যৌতুক সহিংসতা বা পণ মৃত্যু, নারী খৎনা, অপহরণপূর্বক বিবাহ বা জোরপূর্বক বিবাহ। আবার কিছু কিছু ধরনের সহিংসতার কর্তা হচ্ছে রাষ্ট্র, যেমন – যুদ্ধকালীন যৌন সহিংসতা, সংঘর্ষের সময় যৌন সহিংসতা এবং যৌন দাসত্ব, বাধ্যতামূলক নির্বীজন, জোরপূর্বক গর্ভপাত, পুলিশ ও কর্তৃত্বকারী কর্মকর্তা বা কর্মচারীর দ্বারা সহিংসতা, পাথর ছুড়ে হত্যা বা চাবুক মারা। আবার অনেক ধরনের যৌন সহিংসতা সংগঠিত অপরাধ চক্রের দ্বারা, যেমন – নারী পাচার এবং জোরপূর্বক বেশ্যাবৃত্তি।
সহিংসতার কারণ: নারীর প্রতি সহিংসতার নানাকারণ বিদ্যমান।দারিদ্র্য, বেকারত্ব ও অশিক্ষাসহ নানা কারণে নির্যাতিত হচ্ছে নারীরা। যৌতুকের দাবি মেটাতে না পেরে অসংখ্য নারীর জীবন হয়ে উঠেছে দুর্বিষহ। যৌতুক, বাল্যবিবাহ, বহুবিবাহ, তালাকসহ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে বিদ্যমান আইনগুলোর যথাযথ প্রয়োগ
নেই। তাছাড়া এসব আইন সম্বন্ধে সাধারণ মানুষ সচেতনও নয়।নারীর ওপর সহিংসতার আরেকটি কারণ তাদের প্রতি সমাজের নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি। নারী নিজ পরিবারেও নির্যাতিত হচ্ছে। পরিবার পেড়িয়ে বাইরেও নির্যাতনের শিকার হতে হয় তাদের। অনেক নারী চাইলেও নিজ পরিবারের কাছেও সহিংসতার কথা বলতে পারেন না। দেখা যায়, অনেক সময় পরিবারই নির্যাতিত নারিকে দোষী সাব্যস্ত করে। বিদ্যমান সমাজ ব্যবস্থায় সহিংসতার শিকার অনেক নারী চাইলেও আইনের আশ্রয় নিতে পারেন না। পরিবার ও সন্তানের কথা ভেবে অনেক নারীই এসব অত্যাচার সহ্য করেন বাধ্য হয়ে।নারীর প্রতি সহিংসতার বিভিন্ন কারণগুলোর মধ্যে সামাজিক, অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক প্রভৃতি ক্ষেত্রে বিদ্যমান বৈষম্যই প্রধান। সামাজিক কুপ্রথা ও দৃষ্টিভঙ্গি দারিদ্র্য, বেকারত্ব, নিরাপত্তার অভাব, বালাবিবাহ, বহুবিবাহ, যৌতুক, আইন ও আইনগত অধিকার সম্পর্কে নারীদের অসচেতনতা, আইন ও বিচার ব্যবস্থার দুর্বলতা প্রভৃতি নারীর প্রতি সহিংসতার গুরত্বপূর্ণ কারণ।বাংলাদেশে ধর্ষণের চিত্র আরও ভয়াবহ। ধর্ষণ হলো বেআইনী যৌন ক্রিয়াকলাপ। সাধারণত জোর করে কোন ব্যক্তির ইচ্ছার বিরুদ্ধে আঘাতের হুমকির মধ্যমে যৌন মিলনে বাধ্য করা। ধর্ষক, সন্ত্রাসী, খুনি, মাফিয়াচক্র রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক ছত্রছায়ায় থাকে বলে তারা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও প্রভাবশালী ব্যক্তির প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ মদদে সারা দেশে ধর্ষণসহ অপরাধমূলক কার্যক্রম চালাচ্ছে। এর ফলে প্রান্তিক নারী বিশেষ করে দরিদ্র পরিবারের নারীরাই ধর্ষণের শিকার হচ্ছে বেশি। বিচারিকের দাবিতে ধর্ষণের শিকার নারী ও মেয়েশিশু আইনি সহায়তা পায় না। অপরাধী জামিনে খালাস পেয়ে ভিকটিমকে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে। তারা ভিকটিমের পুরো পরিবারকে জিম্মি করে রাখে।করোনার বিস্তারে বিশ্বের প্রায় প্রতিটি দেশের অর্থনীতি যখন মুখ থুবড়ে পড়তে শুরু করেছিল, কর্মহীন হয়ে পড়েছিল যখন কোটি মানুষ, তখন জাতিসংঘ জনসংখ্যা তহবিলের (ইউএনএফপিএ) এক বৈশ্বিক প্রতিবেদনে শঙ্কা প্রকাশ করে জানানো হয়েছিল, এ ধরনের পরিস্থিতিতে নারীর প্রতি সহিংসতা বাড়বে। ঝুঁকিতে পড়বে নারী ও মেয়েশিশুর প্রজনন স্বাস্থ্য। ‘ইমপ্যাক্ট অব দ্য কোভিড ১৯ প্যানডেমিক অন ফ্যামিলি প্ল্যানিং অ্যান্ড এনডিং জেন্ডার বেজড ভায়োলেন্স ফিমেল জেনিটাল মিউটিলেশন অ্যান্ড চাইল্ড ম্যারেজ’ শীর্ষক প্রতিবেদনও প্রকাশ হয় সেই সময়।
এই কোভিড কালীন সময়ে বরিশালে নারী-শিশুরা যেন এই সহিংসতার শিকার না হয়
এই কারণে কোভিড – ১৯ কালীন সময়ে জেন্ডার ভিত্তিক সহিংসতা মোকাবিলায় নাগরিক সমাজ সংগঠনসমূহের দক্ষতা উন্নয়ন প্রকল্পের সাথে কাজ করছে ইয়ুথনেট। উন্নয়ন সংস্থা আভাসের লিডে নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধ প্লাটফর্মের মাধ্যমে বরিশালের ৬টি উপজেলায় বাস্তবায়নাধীন কর্মকাণ্ডে সহায়তা করছে ইউএনডিপির মানবাধিকার কর্মসূচি।
চার দিন ব্যাপী এই দক্ষতা বৃদ্ধি প্রশিক্ষণের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আভাসের নির্বাহী পরিচালক রহিমা সুলতানা কাজলের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বরিশালের উপ-পরিচালক স্থানীয় সরকার জনাব শহীদুল ইসলাম।

  • ফেইসবুক শেয়ার করুন
     
Website Design and Developed By Engineer BD Network