৯ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, বৃহস্পতিবার

শিরোনাম
তেলবাহী লড়ি উল্টে গিয়ে আগুন লেগে এক জনের মৃত্যু। ভূমি বিষয়ক তথ্যাদি স্কুলের পাঠ্যক্রমে অন্তর্ভুক্ত করার উদ্যোগ গ্রহণ করো হয়েছে-ভূমিমন্ত্রী মির্জা ফকরুলরা তারেক জিয়ার নির্দেশে জনগনের সাথে প্রতারনা ও তামশা করছে-আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বিগ বার্ড ইন কেইজ: ২৫ শে মার্চ রাতে বঙ্গবন্ধুর গ্রেফতার  ঢাবি ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগে ১ কোটি টাকার বৃত্তি ফান্ড গঠিত হাইকোর্টের রায়ে ডিন পদে নিয়োগ পেলেন যবিপ্রবির ড. শিরিন জয় সেট সেন্টার’ থেকে মিলবে প্রশিক্ষণ, বাড়বে কর্মসংস্থান: পীরগঞ্জে স্পীকার বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবস আগামীকাল টুঙ্গিপাড়ায় যাচ্ছেন রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী, সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন বিশিষ্ট রবীন্দ্র সংগীত শিল্পী সাদি মোহম্মদ আর নেই

মেয়র সাক্কুকে অব্যাহতি

আপডেট: ডিসেম্বর ১৪, ২০২১

  • ফেইসবুক শেয়ার করুন

কুমিল্লার মেয়র মনিরুল হক সাক্কুকে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্যপদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। ২৮ অক্টোবর তাকে অব্যাহতি দেওয়া হলেও দলের পক্ষ থেকে গণমাধ্যমকে রহস্যজনক কারণে জানানো হয়নি। সোমবার বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত হয়। মেয়র সাক্কু নিজেই যুগান্তরকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, দলীয় কর্মসূচিতে সন্তোষজনক অংশগ্রহণ না করার অভিযোগে তাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। তার অব্যাহতিপত্রে স্বাক্ষর করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

সাক্কুর বিরুদ্ধে তৃণমূল নেতাকর্মীদের অভিযোগ-বিএনপির টিকিটে কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের (কুসিক) মেয়র নির্বাচিত হয়েও তিনি দলের কোনো কর্মকাণ্ডে অংশ নেন না। সরকারি দলের সঙ্গে আঁতাত করেন। দলের চরম দুর্দিনেও পুলিশ প্রটোকল নিয়ে রাজকীয়ভাবে তিনি চলাফেরা করেন। তার এমন কর্মকাণ্ড নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে নানা সমালোচনা হচ্ছে।

বিএনপি সূত্রে জানা যায়, দ্বিতীয় মেয়াদে কুসিক মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পর সাক্কুকে বিএনপির কোনো কর্মসূচিতে দেখা যায়নি। চরম দুঃসময়েও দল তাকে কাছে পায়নি। এমনকি খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসা সংক্রান্ত আন্দোলনে তিনি একেবারেই নীরব। এ কারণে দলের হাইকমান্ডসহ তৃণমূলে তাকে নিয়ে ব্যাপক ক্ষোভ দেখা দেয়। এরই মধ্যে ২২ সেপ্টেম্বর কুমিল্লা বিভাগীয় সাংগঠনিক সভার আয়োজন করে বিএনপি। এ সভায় জাতীয় নির্বাহী কমিটির নেতারা উপস্থিত ছিলেন। এ ব্যাপারে অনেক আগেই তাকে অবহিত করা হয়। এরপর তিনি ওই সভায় উপস্থিত হননি। এ সময় সাক্কুর বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতারা ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানান।

অনুপস্থিতির কারণ ব্যাখ্যা করতে সাক্কুকে কেন্দ্রীয় কমিটির পক্ষ থেকে কারণ দর্শানোর নোটিশ (শোকজ) করা হয়। এর জবাবে সাক্কু উল্লেখ করেন-ওইদিন মার্কিন রাষ্ট্রদূত আর্ল রবার্ট মিলারের সঙ্গে তার পূর্বনির্ধারিত চাচক্র ছিল। এ কারণে তিনি দলীয় সভায় উপস্থিত থাকতে পারেননি। তবে তার এ ব্যাখ্যায় বিএনপির হাইকমান্ড সন্তুষ্ট হতে পারেনি। তাই ২৮ অক্টোবর দলের জাতীয় কমিটির সদস্যপদ থেকে তাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। কিন্তু বিষয়টিকে গোপন রেখে সুরাহা করার চেষ্টা করেন সাক্কু। দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে দৌড়ঝাঁপ করেও কোনো কাজ হয়নি।

অব্যাহতিপত্রে বলা হয়েছে-কেন্দ্রীয় নির্দেশনার পরিপ্রেক্ষিতে মনিরুল হক সাক্কু যে জবাব দিয়েছেন, তা গ্রহণযোগ্য নয়। ইতঃপূর্বে দলীয় কর্মসূচিতেও তার অংশগ্রহণ সন্তোষজনক না হওয়ায় তাকে জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্যপদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হলো।

২০১১ সালের ২৩ জুন কুমিল্লা পৌরসভা সিটি করপোরেশনে উন্নীত হয়। ২০১২ সালের ৫ জানুয়ারি কুসিক নির্বাচনে বিএনপি নেতা সাক্কু প্রথম মেয়র নির্বাচিত হন। দলীয় টিকিটে মেয়র নির্বাচিত হলেও তিনি দলের জন্য দৃশ্যমান কোনো কাজ করেননি। এ কারণে ২০১৭ সালের ৩০ মার্চ অনুষ্ঠিত কুসিক নির্বাচনে তাকে মনোনয়ন না দেওয়ার সিদ্ধান্তে অটল ছিল বিএনপির হাইকমান্ড। দলীয় সূত্র জানায়, সে সময় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্কু দেখা করেন। তিনি বলেন-তার বাবা মুসলিম লীগের এমপি ছিলেন। আওয়ামী লীগের সঙ্গে তিনি কখনো মিশবেন না। তখন তার কথায় আশ্বস্ত হয়ে খালেদা জিয়া তাকেই মনোনয়ন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।

বিজয়ী হয়ে শপথ অনুষ্ঠানের পর সাক্কু প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনার পায়ে হাত দিয়ে সালাম করেন। এ নিয়ে দলের বিভিন্ন পর্যায় ও তৃণমূলে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। দলের ভেতরে ব্যাপক সমালোচনা হয়। বিষয়টি বিএনপির হাইকমান্ডও ভালোভাবে নেয়নি। কয়েক বছর ধরে বিএনপি সরকারবিরোধী নানা কর্মসূচি দিচ্ছে। এসব কর্মসূচিতে সাক্কুর পক্ষ থেকে একটি গ্রুপ অংশ নিলেও তাকে কখনো দেখা যায়নি।

এ ব্যাপারে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ নজর রাখছিলেন। সর্বশেষ দলের গুরুত্বপূর্ণ পদ থেকে তাকে অব্যাহতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন তারা। বিষয়টি দলের একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে। আগামী সপ্তাহে কুমিল্লা মহানগর বিএনপির কমিটি ঘোষণা হতে পারে। এ কমিটিতেও সাক্কুর নাম না থাকারও সম্ভাবনা রয়েছে।

এ বিষয়ে মেয়র মনিরুল হক সাক্কু যুগান্তরকে বলেন, বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে আমি পারিবারিকভাবে সম্পৃক্ত। সারা জীবন বিএনপি করেছি। এখন অন্য কোনো দলের রাজনীতির সঙ্গে আমার যুক্ত হওয়া সম্ভব নয়। দল যে সিদ্ধান্তই নিক-আমি বিএনপির রাজনীতির সঙ্গেই থাকব।

তিনি বলেন, সরকারি দলের সঙ্গে আঁতাত নয়, নগরীর উন্নয়নমূলক কাজে অনেকের সঙ্গেই বৈঠক করতে হয়। এ নিয়ে দলে সমালোচনা হলে আমার কিছুই বলার নেই। তিনি আরও বলেন, মার্কিন রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে বৈঠক থাকায় ওইদিন দলীর সভায় অংশ নিতে পারিনি। কারণ দর্শানোর নোটিশের জবাবে লিখিতভাবে বিষয়টি দলকে অবহিত করেছি। কিন্তু বিষয়টি আমলে না নিয়ে তারা আমাকে অব্যাহতি দিয়েছেন।

  • ফেইসবুক শেয়ার করুন
     
Website Design and Developed By Engineer BD Network