২০শে মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, সোমবার

শিরোনাম
তেলবাহী লড়ি উল্টে গিয়ে আগুন লেগে এক জনের মৃত্যু। ভূমি বিষয়ক তথ্যাদি স্কুলের পাঠ্যক্রমে অন্তর্ভুক্ত করার উদ্যোগ গ্রহণ করো হয়েছে-ভূমিমন্ত্রী মির্জা ফকরুলরা তারেক জিয়ার নির্দেশে জনগনের সাথে প্রতারনা ও তামশা করছে-আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বিগ বার্ড ইন কেইজ: ২৫ শে মার্চ রাতে বঙ্গবন্ধুর গ্রেফতার  ঢাবি ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগে ১ কোটি টাকার বৃত্তি ফান্ড গঠিত হাইকোর্টের রায়ে ডিন পদে নিয়োগ পেলেন যবিপ্রবির ড. শিরিন জয় সেট সেন্টার’ থেকে মিলবে প্রশিক্ষণ, বাড়বে কর্মসংস্থান: পীরগঞ্জে স্পীকার বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবস আগামীকাল টুঙ্গিপাড়ায় যাচ্ছেন রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী, সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন বিশিষ্ট রবীন্দ্র সংগীত শিল্পী সাদি মোহম্মদ আর নেই

বাবুগঞ্জ সে দিন যা ঘটেছিল

আপডেট: জুলাই ৫, ২০২৩

  • ফেইসবুক শেয়ার করুন

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ কোরবানীর ঈদের কয়েক দিন আগে বরিশালসহ সারা দেশে আলোচিত নাম ছিলো বাবুগঞ্জ। কথা উঠেছিলো এই উপজেলার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা চেয়ারম্যান মিলে জোড় পূর্বক উপজেলা প্রকৌশলীর কাছ থেকে স্বাক্ষর আদায়ের চেষ্টা করছিলো। যতক্ষন স্বাক্ষর দিচ্ছিলো না ততক্ষন পর্যন্ত উপজেলা প্রকৌশলীকে একটি ব্যাংকে আটকে রাখা হয়েছিলো। এমনকি সরকারী কাজে বাধা দেওয়ার কারনে গ্রেফতারেরও হুমকি দিয়েছিলো উপজেলা নির্বাহী অফিসার নুসরাত ফাতিমা। উপজেলা প্রকৌশলী (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মোঃ শহিদুল ইসলাম তখন গন মাধ্যমে দাবী করেছিলেন ২০২২-২৩ অর্থ বছরে বাবুগঞ্জে প্রায় ২ কোটি টাকা বিশেষ বরাদ্ধ আসে। যে টাকা ইউএনও ও উপজেলা চেয়ারম্যান মিলে আত্নসাত করার জন্য তাকে বাদ দিয়ে যৌথ একাউন্ট করেছে।
গন মাধ্যমে এমন খবর প্রকাশে টক অফ দ্যা কানট্রিতে পরিনত হয় বাবুগঞ্জ। ঘটনার দুদিন পরই ঈদের ছুটি হয়ে যাওয়ায় এ বিষয়ে পক্ষ বিপক্ষ কারো কাছ থেকে বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। কিন্তু ঈদের ছুটির গন মাধ্যমের মুখোমুখি হন উপজেলা প্রকৌশলী ও উপজেলা চেয়ারম্যান। ঘটনাটি অপ্রত্যাশিত দাবী করে ইউএনও ও উপজেলা চেয়ারম্যান তার উপর অন্যায় অবিচার বলে দাবী করেছেন উপজেলা প্রকৌশলী। আর বিষয়টিকে উপজেলা প্রকৌশলীর মিথ্যাচার ও নেপথ্য কোন মহলের ইন্ধন ও ষড়যন্ত্র বলে আখ্যা দিয়েছেন । আর এই কথা বলতে গিয়ে অজোড়ে কেদেঁছেন তিনি।
প্রথমেই ঘটনার সময় দেওয়া বক্তব্য (২ কোটি টাকা বরাদ্ধ) প্রত্যাহার করেন উপজেলা প্রকৌশলী শহিদুল ইসলাম। তিনি বলেন তখন উত্তেজিত অবস্থায় হিসেব নিকেশ না করে ২ কোটি টাকার কথা বলেছিলেন। আসলে সেটা সঠিক নয়। প্রকৃত পক্ষে ২০২২-২৩ অর্থ বছরে এই উপজেলায় বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচীতে (এডিপি) বিশেষ বরাদ্ধ আসে ৫০ লাখ টাকা। তিনি বলেন মন্ত্রনালয় জুনের শেষ সময়ে ৫০ লাখ টাকা বিশেষ বরাদ্ধ প্রদান করে। আমাদের হাতে সময় ছিলো ২৬ জুন পর্যন্ত। কাজ করে বিল উত্তোলনের জন্য যথেষ্ট সময় ছিলো না এটি। তাই আমার প্রস্তাব ছিলো ইউএনও,উপজেলা চেয়ারম্যান এবং আমি মিলে যৌথ একাউন্ট করে টাকাটা রেখে দিব। যাতে করে টাকাটা ফেরত না যায়। পরে আমরা প্রকল্প করে কাজ করিয়ে ঠিকাদারদের বিল পরিশোধ করব। কিন্তু আমার এ প্রস্তাবে রাজি না হয়ে ইউএনও ও উপজেলা চেয়ারম্যান যৌথ একাউন্ট করার পরিকল্পনা করেন। যা আমার কাছে টাকাটা খরচের জন্য নিরাপদ মনে হয়নি। তিনি বলেন ঘটনার দিন এক গনমাধ্যম কর্মী ব্যাংক থেকে আমাকে ফোন করেন তার বিজ্ঞাপনের একটি বিলে সমস্যা হয়েছে। তাই আমি ব্যাংকে গিয়েছিলাম। এর কিছুক্ষন পরেই দেখি ইউএনও ও উপজেলা চেয়ারম্যান ব্যাংকে প্রবেশ করেছেন। পরে তারা আমাকে সরকারী কাজে বাধাসহ নানা অভিযোগ তুলে এক পর্যায়ে গ্রেফতারেরও হুমকি দেন। তিনি বলেন প্রকৃত অর্থৈ আমার ইউএনও,উপজেলা চেয়ারম্যান শতভাগ সৎ লোক। এটা নিয়ে কোন প্রশ্ন নেই। কিন্তু ব্যাংক একাউন্টে আমাকে না রাখাটাই যত বিরোধের কারন। তিনি আরো বলেন এ ঘটনার পর আমি আমার উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বলেছি আমাকে বদলী করে দেওয়ার জন্য। তিনি আরো বলেন যেহেতু আমাকে শেষ পর্যন্ত ব্যাংক হিসাবে রাখেনি তাই এই টাকা খরচ ও বিল প্রদানের বিষয়ে আমি কিছু জানি না।
উপজেলা চেয়ারম্যান কাজী এমদাদুল হক দুলাল বলেন নিয়ম অনুযায়ী একটি উপজেলা পরিষদের আয়ন ব্যয়ন কর্তৃপক্ষ। তারপরও যেহেতু উপজেলা প্রকৌশলী ব্যাংক হিসাবে থাকতে চেয়েছে আমি রাজি হয়েছি। এমনকি আমি তার দেওয়া ব্যাংক হিসেব বইতে স্বাক্ষরও দিয়ে দিয়েছি। ঘটনার দিন ছিলো টাকা ফেরত যাওয়ার আগের দিন। আমাদের সিদ্ধান্ত ছিলো ওই ব্যাংক হিসাব খুলে টাকাটা রেখে দিব। কিন্তু দুপুর পর হতে চললেও হিসাব খোলার জন্য ফোন করেও উপজেলা প্রকৌশলীকে পাচ্ছিলাম না। পরে খবর পাই যে তিনি ব্যাংকে আছেন। খবর পেয়ে আমি এবং ইউএনও ব্যাংকে যাই। তখন তাকে ব্যাংকে অবস্থানের কারন জানতে চাইলে এক কথায় দু কথায় উভয়েই একটু উত্তেজিত হই। কিন্তু বিষয়টি ব্যাংকে বসেই সমাধান হয়ে যায়। পরে মিডিয়ায় দেখতে পাই উপজেলা প্রকৌশলী আমি এবং ইউএনও সাহেবের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ তুলে বক্তব্য দিয়েছেন। যা আমাদের ব্যাথিত করেছে। এসময় কেদে ফেলেন তিনি। তিনি বলেন অনেক কষ্ট করে এই বিশেষ বরাদ্ধ এনেছি। আর এই টাকা ফেরত যাক তা কোন ভাবেই আমরা তা চাইনি। তাই শেষ সময়ে একটু তাড়াহুড়া হয়েছে। কিন্তু উপজেলা প্রকৌশলী ঘটনাটি অন্য ভাবে উপস্থাপন করেছেন। তিনি বলেন বিশেষ বরাদ্ধ এসেছে ৫০ লাখ। অথচ প্রকৌশলী তখন বলেছে ২ কোটি। এখন আবার আপনাদের কাছে হিসেব না দিতে পেরে নিজের আগের দেওয়া বক্তব্য থেকে সরে আসলেন। এটা কি ছেলে খেলা। তার বক্তব্যের কারনে সারা দেশের মানুষের কাছে আমি ও উপজেলার মানুষ হেয় হয়েছে। মিডিয়া ট্রয়াল হয়েছে। এই মিথ্যা বক্তব্যের দায়ভার তাকেই নিতে হবে। উপজেলা চেয়ারম্যান বলেন আমি ব্যক্তিগত ভাবে মনে করি উপজেলা প্রকৌশলী একজন মানুসিক রোগী। তাকে আমি বলেছি আমার সাথে ভারত গিয়ে চিকিৎসা নেবার জন্য। ইমদাদুল হক বলেন আমার সন্দেহ হয়েছিলো উপজেলা প্রকৌশলী জুনের শেষ দিকে গিয়ে প্রকল্পগুলো নিয়ে একটি ঝামেলা করবেন। তাই জুনের ৭ তারিখে জেলা প্রশাসক বরাবরে স্থানীয় সরকার বিভাগের কার্যক্রম তরান্বিত করার জন্য ও সার্বিক ঘটনার বর্ননা দিয়ে একটি আবেদন করেছিলাম। আর ঘটনাটি ঘটে ২০ তারিখের পরে। আমার ধারনাই সত্যি হলো। শেষ পর্যন্ত উনি ঝামেলাই সৃষ্টি করলেন।

প্রসঙ্গত,পিএইচডি ডিগ্রী অর্জনের জন্য দেশের বাইরে যাওয়ার উদ্দেশ্যে রিলিজ নিয়ে চলে যাওয়ায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার নুসরাত ফাতিমা কে পাওয়া সম্ভব হয়নি এমনকি মুঠো ফোনেও তাকে পাওয়া সম্ভব হয়নি।

  • ফেইসবুক শেয়ার করুন
     
Website Design and Developed By Engineer BD Network