আপডেট: নভেম্বর ২১, ২০২১
উজিরপুর (বরিশাল) প্রতিনিধিঃ
বরিশালের উজিরপুরে গুঠিয়ায় তৃতীয় ধাপে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে থাকছেনা নৌকা ও ধানেরশীষের প্রতীক। বড় দুই রাজনৈতিক দলের কোন প্রতীক না থাকায় সাধারণ ভোটারদের মাঝে নেই নির্বাচনী আমেজ। আওয়ামীলীগ মনোনিত চেয়ারম্যান প্রার্থী আব্দুস ছত্তার মোল্লাকে মনোনয়ন ফরমে তথ্য গোপন করার অপরাধে নির্বাচন কমিশন তার মনোনয়ন পত্র বাতিল করেন। সেই রায় হাইকোর্টেও বহাল থাকায় আগামী ২৮ নভেম্বর নির্বাচনে থাকছে না নৌকা প্রতিক। এদিকে গুঠিয়া ইউনিয়ন বিএনপির ভোট ব্যাংক হলেও গত ইউপি নির্বাচনে ধানের শীষের প্রার্থীকে হারিয়ে চার বারের ইউপি চেয়ারম্যান ডাঃ দেলোয়ার হোসেন নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচিত হন। বিএনপি কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী স্থানীয় সরকারের নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেনা বিএনপি। ওই ইউনিয়নে বিএনপির প্রভাবশালী নেতা এস সরফুদ্দিন আহমেদ সান্টুর বাড়ি। বিএনপি প্রার্থী না দিলেও ওই ইউনিয়নের বিএনপির নেতৃবৃন্দ আওয়ামীলীগের বিদ্রোহী প্রার্থীদের নিয়ে নির্বাচনী মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন। এনিয়েও দলের ভিতর রয়েছে অসন্তোষ। বর্তমানে ওই ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামীলীগের বিদ্রোহী প্রার্থী হয়ে মনোনয়ন ফরম জমা দিয়েছিলেন উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক আওরঙ্গজেব হাওলাদার, ০৪ নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সদস্য ইজাজুল হক সজিব সরদার, হাতপাখার প্রার্থী মাওলানা মোঃ সাখাওয়াত হোসেন এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী মোঃ নাছির উদ্দীন। স্বতন্ত্র প্রার্থী নাছির উদ্দীন আওয়ামীলীগের চেয়ারম্যান প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিলের জন্য আবেদন করে বরিশাল জেলা আঞ্চলিক নির্বাচন অফিসের কার্যালয়ে। সেই আবেদনের প্রেক্ষিতে কাগজ যাচাই-বাছাই শেষে উভয় প্রার্থীদের সামনে আওয়ামীলীগের চেয়ারম্যান প্রার্থীর মনোনয়ন পত্র বাতিল করা হয়েছে। নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক স্থানীয় আওয়ামীলীগের কর্মীরা জানান, আওয়ামীলীগের মনোনিত চেয়ারম্যান প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিল হওয়ায় একপর্যায়ে দলীয় সিদ্ধান্ত থেকে হাফ ছেড়ে বাঁচলেন। আওয়ামীলীগের মনোনিত প্রার্থী নির্বাচনী মাঠে থাকলে তাদেরকে দল থেকে আজীবনের জন্য বহিস্কার হওয়ার সম্ভাবনা ছিলো। সেই কারনেই তারা সামনে না এসে কৌশলে স্বতন্ত্র প্রার্থী নাছির উদ্দীন কে দিয়ে আওয়ামীলীগের প্রার্থী আব্দুস ছত্তার মোল্লার বিপক্ষে গোপনে তথ্য সংগ্রহ করে নির্বাচন অফিসে দাখিল করে। যার কারনে সেই তথ্যের উপর দুই পক্ষের আইনি লড়াই শেষে আওয়ামীলীগের প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিল করা হয়েছে। সেই রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্ট আপিল করলেও সেইখানেও তাদের রায় বহাল থাকে। এ নিয়ে তৃণ্যমূল আওয়ামীলীগের নেতৃবৃন্দের ভিতর মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। ওই ইউনিয়নের আওয়ামীলীগের চেয়ারম্যান মনোনয়ন প্রত্যাশী উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম-সম্পাদক এনামুল হক শাহীন জানান, দলের ভুল সিদ্ধান্তের মাশুল গুনছে গুঠিয়া ইউনিয়ন তৃনমূল আওয়ামীলীগ। এর খেসারত দিতে হবে দলকে।
আওয়ামীলীগের বিদ্রোহী প্রার্থী আওরঙ্গ জেব হাওলাদার জানান, দল সিদ্ধান্তকে আমি সাধুবাদ জানাই। তবে যাকে দল মনোনয়ন দিয়েছে তিনি হত্যা মামলায় সাজাপ্রাপ্ত আসামি হওয়ায় তার মনোনয়ন বাতিল হতে পারে সেই আশঙ্কা থেকে আমি প্রার্থী হয়েছি। যদি তার মনোনয়ন বৈধ থাকতো তাহলে দলের সিদ্ধান্ত মেনে মনোনয়ন প্রত্যাহার করতাম। তার মনোনয়ন বাতিল হওয়ায় এখন দলের সম্মানরক্ষার্থে আমি নির্বাচনে মাঠে মোটরসাইকেল প্রতীক নিয়ে লড়বো।
উপজেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল মাজেদ তালুকদার মন্নান মাষ্টার জানান, বিএনপির কোন নেতাকর্মী দলের সিদ্ধান্তের বাহিরে কোন প্রার্থীদের সাথে নির্বাচনী মাঠে থাকলে তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বরিশাল জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য এ্যাড. তালুকদার মোঃ ইউনুসের কাছে জানতো চাইলে এ ব্যাপারে কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি তিনি।