আপডেট: ডিসেম্বর ২৩, ২০১৯
হামলায় আহত ভিপি নুরুল হক নুরকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দেখতে গিয়ে অপমানিত হয়ে ফিরে এসেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান। এ সময় ভিপি নুরের শয্যাপাশে থাকা শিক্ষার্থীরা ভিসিকে দেখে ‘নির্লজ্জ’ ও ‘ভারতের দালাল’ আখ্যা দেন। তারা প্রশ্ন করেন– ছাত্রলীগের পক্ষে আর কত দালালি করবেন?
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন নুরকে রোববার রাতে দেখতে যান উপাচার্য আখতার ও প্রক্টর গোলাম রব্বানী। এ সময় তারা শিক্ষার্থদের তোপের মুখে পড়েন। ঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করতে না পারলে তাদের পদত্যাগ করতে বলেন বিক্ষুব্ধরা। এ সময় বিক্ষুব্ধরা উপাচার্যকে উদ্দেশ করে বলেন, ‘আমাদের গুলি করেন স্যার। আমাদের মেরে ফেলেন। আমরা কিছু করব না।’ পরে হাসপাতাল থেকে চলে আসেন এ দুই শিক্ষক।
হাসপাতালে নুরের শয্যাপাশে উপস্থিত কয়েক শিক্ষার্থী প্রথমে উপাচার্যকে হাসপাতালে নুরের বেডে যেতে দেননি। পরে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান ও প্রক্টর অধ্যাপক ড. একেএম গোলাম রব্বানী সেখানে গেলেও তাদের উপস্থিতিতে পদত্যাগ দাবি করেন শিক্ষার্থীরা। নুরকে দেখে হাসপাতাল ত্যাগ করার সময় উপাচার্য ও প্রক্টরকে ‘ভারতের দালাল’ ও ‘নির্লজ্জ’ বলে গালি দেন শিক্ষার্থীরা।
এক ছাত্র প্রক্টরের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে ভিসিকে বলেন, ‘স্যার (প্রক্টর) আমার অভিভাবক। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ছি। উনি আমাকে রক্ষা করবেন। উনি আমার বাবার বয়সী। উনি আমাকে বলেছেন, তোমাকে বহিষ্কার করব। পুলিশে দেব। আমার বুকটা ফেটে গেছে।’
ঢাবির আইন বিভাগের শিক্ষার্থী সালাহউদ্দিন সিফাত বলেন, ডাকসু ভিপি নুরসহ অন্যদের ওপর হামলার সময় আমি প্রক্টর স্যারের কাছে বিচারের দাবি নিয়ে গেলে তিনি আমাকে বলেন, ‘তুমি বেশি নেতা হয়ে যাচ্ছ। তোমাকে বহিষ্কার করব।’ আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষার্থী, তিনি আমাকে রক্ষা না করে উল্টো বহিষ্কারের হুমকি দিয়েছেন, পুলিশে দেয়ার কথা বলেছেন। একজন শিক্ষক ও দায়িত্বশীল হিসেবে তিনি এটি করতে পারেন না।’
এ সময় কয়েকজন ছাত্র বলেন, ‘স্যার দায়িত্ব পালন করতে না পারলে আপনি পদত্যাগ করেন। যদি মনে করেন, আপনি পারবেন না, তা হলে পদত্যাগ করেন। আমাদের গুলি করেন স্যার। আমাদের মেরে ফেলেন। আমরা কিছু করব না।’ তোপের মুখে উপাচার্য ও প্রক্টর হাসপাতালের কক্ষ থেকে বেরিয়ে যেতে থাকলে বিক্ষুব্ধরা নানা স্লোগান দেন। এ সময় শিক্ষার্থীরা সমস্বরে বলে ওঠেন, ‘আমরা আপনাদের চাই না। যদি মনে হয়, আপনারা এর বিচার করতে পারবেন না, দায়িত্ব পালন করতে পারবেন না, তা হলে পদত্যাগ করুন।’
হাসপাতাল ত্যাগ করার আগে উপাচার্য নুরের স্বাস্থ্যের খোঁজখবর নেন। বলেন, ‘আমি জেনেছি– সুপরিকল্পিতভাবে বড় আকারের একটা ঘটনা ঘটানোর প্রয়াস ছিল। আমি কিছু ছবি দেখলাম, বহিরাগত– ওরা কারা? তোমাকে আটকে রেখে একটা লাশ চেয়েছিল বোধহয়। তুমি বোধহয় ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে যাচ্ছ।’ প্রসঙ্গত রোববার ডাকসুতে ভিপি নুরের কক্ষে ঢোকে লাইট নিভিয়ে তাকে ও তার সঙ্গীদের বেধড়ক মারধর করে মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ। ভিপি নুরসহ আহতদের দাবি– ছাত্রলীগও এ হামলায় সরাসরি জড়িত। এ ঘটনায় গুরুতর আহত ফারাবীর অবস্থা সংকটাপন্ন।
ভিডিও