আপডেট: ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০২০
প্রথমবারের মতো একদিনে গত বুধবার চীনের বাইরে আক্রান্তের সংখ্যা চীনের ভেতরে আক্রান্তের সংখ্যাকে ছাড়িয়ে গেছে বলে জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।
এ পরিস্থিতিতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সরকার প্রাদুর্ভাব মোকাবিলার প্রস্তুতি আরও জোরদার করেছে।
তিনি বলেন, আইইডিসিআর-এর ভাইরোলজি ল্যাবরেটরিতে সন্দেহজনক কোভিড-১৯ আক্রান্তদের নমুনা পরীক্ষা করে এ যাবৎ কারো শরীরে এ ভাইরাস পাওয়া যায়নি।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার পরিচালনায় আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, সমুদ্রবন্দর, স্থল বন্দরগুলো বিদেশ থেকে আসা সব যাত্রীর তাপমাত্রা পরীক্ষা করা হচ্ছে।
শুক্রবার কোভিড-১৯ লক্ষণযুক্ত যাত্রী পাওয়া যায়নি।
এদিকে নতুন করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বর্তমানে এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে এখনই কার্যকর ও সমন্বিত পদক্ষেপ না নেয়া হয়, তাহলে বিশ্বজুড়ে এর প্রাদুর্ভাব সৃষ্টি করতে পারে।
এমন আশংকা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান তেদ্রোস গেব্রিয়েসাসের।
ভাইরাসটি ‘নির্ণায়ক বিন্দুতে’ পৌঁছেছে এবং এর ‘মহামারি হয়ে ওঠার আংশকা’ রয়েছে বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।
সংক্রমণ ঠেকাতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে একের পর এক পদক্ষেপের মধ্যেই তেদ্রোস পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকারগুলোতে দ্রুত ও জরুরি পদক্ষেপ নিতে পরামর্শ দিয়েছেন। খবর বিবিসি’র।
তেদ্রোস বলেন, চীন ছাড়া বাকি পৃথিবীতে যা ঘটছে, তা নিয়েই এখন আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন।
আমরা এখন এমন এক সংবেদনশীল পর্যায়ে পৌঁছেছি যে, সংক্রমণ পরিস্থিতি যে কোনো দিকে যেতে পারে।
ভাইরাসটির মহামারি হয়ে উঠতে পারে।
এখন আতঙ্কিত হওয়ার সময় নয়।
এখন সময় সংক্রমণ প্রতিরোধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ ও জীবন বাঁচানোর।
চীনের উহান প্রদেশ সংক্রমন সৃষ্টিকারি নতুন করোনাভাইরাস ইতিমধ্যে বিশ্বের আনাচেকানাচে ছড়িয়ে পড়ছে।
এখন পর্যন্ত যথাযথভাবে এ ভাইরাস মোকাবিলা করতে পারছে না আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞান।
এ পরিস্থিতি বৈশ্বিক মহামারী আকার ধারণ করতে পারে বলে আশংকা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার। এরই মধ্যে ভাইরাসটি বিশ্বের ৫৩টি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে।
সর্বশেষ নিউজিল্যান্ড, নেদারল্যান্ডস, নাইজেরিয়া, বেলারুশ ও লিথুয়ানিয়া নিজেদের দেশে প্রথম করোনা আক্রান্ত রোগী পাওয়ার খবর নিশ্চিত করেছে।
ইতিমধ্যে যে ৫৩টি ভাইরাসটির বিস্তার ঘটেছে সেগুলো হল- আফগানিস্তান, আলজেরিয়া, অস্ট্রেলিয়া, অস্ট্রিয়া, বাহরাইন, বেলারুশ, বেলজিয়াম, ব্রাজিল, কম্বোডিয়া, কানাডা, চীন, ক্রোয়েশিয়া, ডেনমার্ক, মিশর, এস্তোনিয়া, ফিনল্যান্ড, ফ্রান্স, জর্জিয়া, জার্মানি, গ্রিস, ভারত, ইরান, ইরাক, ইসরায়েল, ইতালি, জাপান, কুয়েত, লেবানন, লিথুয়ানিয়া, মালয়েশিয়া, নাইজেরিয়া, নেপাল, নেদারল্যান্ডস, নিউজিল্যান্ড, উত্তর মেসিডোনিয়া, নরওয়ে, ওমান, পাকিস্তান, ফিলিপাইন, রোমানিয়া, রাশিয়া, সিঙ্গাপুর, দক্ষিণ কোরিয়া, স্পেন, শ্রীলঙ্কা, সুইডেন, সুইজারল্যান্ড, তাইওয়ান, থাইল্যান্ড, সংযুক্ত আরব আমিরাত, যুক্তরাজ্য, মার্কিন যুক্তরাস্ট্র ও ভিয়েতনাম।
প্রসঙ্গত, অ্যান্টার্কটিকা ছাড়া সব মহাদেশে ছড়িয়ে পড়েছে নতুন করোনাভাইরাসের সংক্রমণ।
বিশ্বের ৫৩টি দেশে এই ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ৮৩ হাজার ছাড়িয়ে গেছে।
প্রাণঘাতী এ ভাইরাসটির প্রাদুর্ভাবে গত দুই মাসে অন্তত ২ হাজার ৮৫৮ মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন।
দিন যতই যাচ্ছে ভাইরাসটির প্রাদুর্ভাব ক্রমেই বৈশ্বিক মহামারীর রূপ নিচ্ছে।