২৬শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শুক্রবার

শিরোনাম
তেলবাহী লড়ি উল্টে গিয়ে আগুন লেগে এক জনের মৃত্যু। ভূমি বিষয়ক তথ্যাদি স্কুলের পাঠ্যক্রমে অন্তর্ভুক্ত করার উদ্যোগ গ্রহণ করো হয়েছে-ভূমিমন্ত্রী মির্জা ফকরুলরা তারেক জিয়ার নির্দেশে জনগনের সাথে প্রতারনা ও তামশা করছে-আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বিগ বার্ড ইন কেইজ: ২৫ শে মার্চ রাতে বঙ্গবন্ধুর গ্রেফতার  ঢাবি ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগে ১ কোটি টাকার বৃত্তি ফান্ড গঠিত হাইকোর্টের রায়ে ডিন পদে নিয়োগ পেলেন যবিপ্রবির ড. শিরিন জয় সেট সেন্টার’ থেকে মিলবে প্রশিক্ষণ, বাড়বে কর্মসংস্থান: পীরগঞ্জে স্পীকার বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবস আগামীকাল টুঙ্গিপাড়ায় যাচ্ছেন রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী, সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন বিশিষ্ট রবীন্দ্র সংগীত শিল্পী সাদি মোহম্মদ আর নেই

পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার সঙ্গে সম্পর্ক ছিল সাদিয়ার!

আপডেট: মার্চ ১২, ২০২০

  • ফেইসবুক শেয়ার করুন

পুলিশের হাতে গ্রেফতার হওয়ার পর মহিলা শ্রমিক লীগ নেত্রী সাদিয়া আক্তার মুক্তা (৩২) এখন ‘টক অব দ্য খুলনা’।

জানা গেছে, আওয়ামী লীগের বড় বড় নেতার সঙ্গে সাদিয়ার সখ্য ছিল।

এমনকি খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার সঙ্গে তার সুসম্পর্ক ছিল।

বিভিন্ন অপরাধে জড়িত থাকায় গত সোমবার সাদিয়াকে গ্রেফতার করে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের একটি বিশেষ টিম।

তার বাসা থেকে ১২ ভরি ৩ আনা চোরাই স্বর্ণ এবং স্বর্ণ বিক্রির ২ লাখ ৮২ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়েছে।

তবে চোরাই সিন্ডিকেটের সঙ্গে পুলিশ বা রাজনীতিবিদ কেউ জড়িত থাকলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে হুশিয়ার দিয়েছেন খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের ডিসি (সাউথ) মোহাম্মদ এহসান শাহ।

পুলিশ জানায়, সাদিয়া স্বর্ণ চোরাই সিন্ডিকেটের হোতা। গ্রেফতারে পর মঙ্গলবার তাকে ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করা হয়। বৃস্পতিবার (আজ) রিমান্ডের শুনানি হবে।

সূত্রে জানা গেছে, স্থানীয় আওয়ামী লীগকে পাত্তা না দিয়ে কেন্দ্র থেকে খুলনা মহানগর মহিলা শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদকের পদটি বাগিয়ে নিয়েছিলেন সাদিয়া।

তবে নানা অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ৩১ জুলাই তাকে বহিষ্কার করা হয়।

অনুসন্ধানে জানা যায়, বাগেরহাট জেলার মোরেলগঞ্জের নিশানবাড়িয়া এলাকার মৃত আলতাফ সরদার ও মৃত মোসাম্মদ ফরিদা বেগমের দ্বিতীয় কন্যা সাদিয়া।

বাবা নগরীর সোনাডাঙ্গা থানার পাশে মুদি দোকানের ব্যবসা করতেন।

দেড় যুগ আগে ঢাকার জুরাইন এলাকার ছেলে শুকুর আলীর সঙ্গে সাদিয়ার বিয়ে হয়।

এ সময় শুকুর প্লট ও জমির ব্যবসা করতেন।

সাদিয়া রাজনীতিতে সম্পৃক্ত হওয়ার পর স্থানীয় আওয়ামী লীগের সঙ্গে বনিবনা হচ্ছিল না।

তবে কয়েক বছর আগে কেন্দ্র থেকে খুলনা মহানগর মহিলা শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক পদটি বাগিয়ে নেন তিনি।

পরবর্তী সময়ে খুলনা মহানগর আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে নগর আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ নেতার সঙ্গে সাদিয়াকে দেখা যায়।

তবে নানাবিধ অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে গত বছরের ৩১ জুলাই তাকে পদ থেকে বহিষ্কার করে যুগ্ম সম্পাদক জাহানারা বেগমকে ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের পদ দেয়া হয়।

অনুসন্ধানে আরও জানা যায়, নগরীর সোনাডাঙ্গা এলাকার মজিদ সরণিতে অবস্থিত ‘গুহা ইন খুলনা’ রেস্টুরেন্টের ব্যবসা রয়েছে সাদিয়া-শুকুর দম্পতির। এটি খুলনার একমাত্র মাটির নিচে থাকা রেস্টুরেন্ট। মার্চের শুরুতেই সাদিয়া দম্পতি সর্বশেষ এ রেস্টুরেন্টে এসেছিলেন।

তবে রেস্টুরেন্টের কর্মচারীদের ভাষায়- ম্যাডাম (সাদিয়া) আটকের কিছুদিন আগে থেকে মালিকপক্ষের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ নেই রেস্টুরেন্টের ম্যানেজার জিহাদ আল মামুনের।

তিনি এ প্রতিবেদককে বলেন, শুকুরের ভাই লিটনের মাধ্যমে তারা এ রেস্টুরেন্ট পরিচালনা করছেন।

ঘটনাস্থলে গিয়ে জানা যায়, কিছুদিন আগে র‌্যাব কর্মকর্তারাও রেস্টুরেন্টের মালিক সম্পর্কে খোঁজখবর নিতে এসেছিলেন।

এদিকে নগরীর হরিণটানা থানার রাসেল সড়কে এ দম্পতির বহুতল ভবন রয়েছে।

বাড়ির সামনে ১টি এবং গ্যারেজে ৪টি মোটরসাইকেল দেখা যায়।

যার বেশিরভাগের রেজিস্ট্রেশন নেই।

ভবনের নিচতলার ১টি ফ্ল্যাটে সাদিয়ার বড় ভাই মানিক সরদার এবং অপরটিতে ভাড়াটিয়া রয়েছেন।

পুরো বাড়ি সিসি ক্যামেরার আওতায়।

প্রতিবেদককে সাদিয়ার বড় ভাই মানিক বলেন, আমার বোন ষড়যন্ত্রের শিকার।

সে কোনো ধরনের চোরাই স্বর্ণের সিন্ডিকেটের সঙ্গে জড়িত নয়।

তবে রাজনীতি করায় তার অনেক শক্র হয়েছে।

এছাড়া শুকুর জমির ব্যবসা করার কারণেও শত্রু বেড়েছে।

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের পেছনে শুকুরের ৪ কাঠা জমি আছে, যা নিয়ে পার্শ্ববর্তী লোকজনের সঙ্গে ঝামেলা আছে।

তবে তিনি স্বীকার করেন যে, শুকুর কয়েকদিন ধরে আত্মগোপনে রয়েছেন।

ঘটনার বিষয়ে সাদিয়ার স্বামী শুকুর আলীর ব্যবহৃত সেলফোনে

একাধিকবার ফোন এবং খুদে বার্তা দিলেও তিনি কোনো উত্তর দেননি।

জানতে চাইলে জাতীয় শ্রমিক লীগ মহানগরের সাধারণ সম্পাদক রণজিত কুমার ঘোষ বলেন, সাদিয়া কেন্দ্র থেকে পদ নিয়ে

এসেছিলেন।

আমরা অনেকেই এর বিরোধিতা করেছিলাম।

নানাবিধ অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে গত বছরের ৩১ জুলাই তাকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হয়।

খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের ডিসি (সাউথ) মোহাম্মদ এহসান শাহ বলেন, সাদিয়া সোনা চোরাই সিন্ডিকেটের মূল হোতা।

তার বিরুদ্ধে খিলগাঁও থানায় স্বর্ণালংকার চুরির মামলা আছে।

পুলিশ চক্রটির সব সদস্যকে পাকড়াওয়ের চেষ্টা চালাচ্ছে। তার স্বামী শুকুর পলাতক।

তার বিষয়েও খোঁজ নেয়া হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, সাদিয়া দম্পতির সোর্স অব ইনকাম নিয়ে সন্দেহ আছে।

এ চোরাই সিন্ডিকেটের সঙ্গে পুলিশ বা রাজনীতিবিদ কেউ জড়িত থাকলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

প্রাথমিকভাবে সাদিয়া দীর্ঘদিন চোরাই সিন্ডিকেটের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকার কথা স্বীকার করেছেন বলে জানান পুলিশের এ কর্মকর্তা।

  • ফেইসবুক শেয়ার করুন
     
Website Design and Developed By Engineer BD Network