আপডেট: আগস্ট ২৯, ২০২১
জিএম রিপন, বানারীপাড়া (বরিশাল) প্রতিনিধি
পৃথিবির দৈনন্দিন আলো দেখার জন্য যারা অর্থের অভাবে চুক্ষু চিকিৎসা করাতে পারেন না সেইসব এলাকার অসহায় সাধারণ মানুষদের ‘ফ্রি’ চক্ষু চিকিৎসাসেবা দেয়ার উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন বরিশালের বানারীপাড়ায় গ্লোবাল মেডিকেল ফাউন্ডেশন অস্ট্রেলিয়া ভিশন ২০২১’র মসজিদ বাড়ি কেয়ার কমপ্লেক্সের সভাপতি ও সৈয়দকাঠী ইউনিয়ন ইসলামিয়া কলেজ এবং সৈয়দকাঠী ইউনিয়ন মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা মো.জাহিদুল হক দুলাল। এপর্যন্ত তিনি উপজেলার বিভিন্ন এলাকার ১৩৫৫ জন চক্ষু রোগীকে ‘ফ্রি’ চিকিৎসাসেবা দেয়ার পাশাপাশি ১২০ জনকে চোখের সানী ও ৩০ জনকে নেত্রনালী অপারেশন করার প্রয়োজনীয় ব্যায় বহণ করেন।
জানা গেছে, শুক্রবার সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত উপজেলার সৈয়দকাঠী ইউনিয়ন ইসলামিয়া কলেজ গ্লোবাল মেডিকেল ফাউন্ডেশন অস্ট্রেলিয়া ভিশন ২০২১’র মসজিদ বাড়ি কেয়ার কমপ্লেক্সের কম্পাউন্ডে উদ্যোগে ‘ফ্রি’ চক্ষু চিকিৎসা ক্যাম্প অনুষ্ঠিত হয়। এদিন ‘ফ্রি’ চক্ষু চিকিৎসা ক্যাম্প’র উদ্ধোধন করেণ কেয়ার কমপ্লেক্সের সভাপতি ও সৈয়দকাঠী ইউনিয়ন ইসলামিয়া কলেজ এবং সৈয়দকাঠী ইউনিয়ন মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা মো.জাহিদুল হক দুলাল। এসময় সেখানে চক্ষু বিশেষজ্ঞ ডাক্তার কানিচ ফাতেমা বিভিন্ন এলাকার ৪৭২ জন চক্ষু রোগীকে ‘ফ্রি’ চিকিৎসা প্রদানের পাশাপাশি ৪০ জন রোগীর চোখের সানি ও ১০ জন রোগীর চোখে নেত্রনালী অপারেশনের জন্য বরিশাল ইস্পাহানী ইসলামিয়া চক্ষু হাসপাতালে রেফার করেণ। এসময় সেখানে কেয়ার কমপ্লেক্সের উদ্যোগে উক্ত চক্ষু রোগীদের প্রয়োজনীয় ঔষধ প্রদান ও চশমা বিতরণ করার পাশাপাশি ৫০ জন চক্ষু রোগীকে ‘ফ্রি’ অপারেশনের জন্য ওই দিন বিকেলে বরিশাল ইস্পাহানী ইসলামিয়া চক্ষু হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। এক্ষেত্রে কেয়ার কমপ্লেক্সের পক্ষ থেকে ওই রোগীদের যাতায়াত ব্যবস্থা করার পাশাপাশি সেখানে তাদের চক্ষু অপারেশনের সময় প্রয়োজনীয় ঔষধ প্রদান করা হয়। এর পূর্বেও ওই প্রতিষ্ঠানটি গত দু’মাসে একই স্থানে ১ দিন করে পৃথক দু’টি ‘ফ্রি’ চুক্ষ চিকিৎসা ক্যাম্পে ৮৮৩ জন চক্ষু রোগীকে চিকিৎসা সেবা দেয়ার পাশাপাশি ৮০ জনকে বরিশাল ইস্পাহানী ইসলামিয়া চক্ষু হাসপাতালে নিয়ে চোখের সানী ও ২০ জনকে চোখের নেত্র নালী অপারেশন করার যাবতীয় খরচ বহণ করেছেন।
এবিষয়ে কেয়ার কমপ্লেক্সের সভাপতি ও সৈয়দকাঠী ইউনিয়ন ইসলামিয়া কলেজ এবং সৈয়দকাঠী ইউনিয়ন মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা মো.জাহিদুল হক দুলাল জানান, তিনি এলাকার খেটে খাওয়া অসহায় পরিবারের শিক্ষার্থীদের আলোকিত করার জন্য নিজ উদ্যোগে দু’টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান করেছেন। এক্ষেত্রে তার প্রতিষ্ঠানে আসা শিক্ষার্থীদের অভিভাবক ও পার্শবর্তী বিভিন্ন এলাকায় যারা অর্থের অভাবে চক্ষু চিকিৎসা করাতে পাছেন না, তিনি তাদের জন্য ‘ফ্রি’ চক্ষু চিকিৎসা-সেবা দেয়ার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করার পাশাপাশি যাদের চোখে ছানী ও নেত্র নালী অপারেশন করা প্রয়োজন তাদের জন্য ‘ফ্রি’ ডাক্তারসহ প্রয়োজনীয় ঔষধ এবং খাবারসহ যাতায়াত ব্যবস্থার উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন।
জানা গেছে, উপজেলার সৈয়দকাঠী ইউনিয়ন ইসলামিয়া কলেজ ও সৈয়দকাঠী ইউনিয়ন মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা এবং কেয়ার কমপ্লেক্সের সভাপতি মো.জাহিদুল হক দুলাল দীর্ঘ দিন ধরে নিজ অর্থায়নে এলাকার দু’টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা দিয়ে আসছিলেন। সম্প্রতি তার প্রতিষ্ঠিত সৈয়দকাঠী ইউনিয়ন ইসলামিয়া কলেজটি সরকারী ভাবে এমপিওভূক্ত হলেও ফলাফলের দিক থেকে ভাল করা সৈয়দকাঠী ইউনিয়ন মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়টি এখনও এমপিওভূক্ত করা হয়নী। ফলে জাহিদুল হক দুলাল তার নিজ অর্থায়নে ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীদের প্রতি মাসে বেতন-ভাতা দিয়ে আসছেন। এসব কারণে তিনি এলাকার সাধারণ মানুষের কাছে জনপ্রিয় হয়েছেন। এদিকে চক্ষু চিকিৎসা ক্যাম্প অনুষ্ঠানের সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, সৈয়দকাঠী ইউনিয়ন ইসলামিয়া কলেজের অধ্যক্ষ গোপাল কৃষ্ণ বসাক, কেয়ার কমপ্লেক্সের কো-অডিনেটর নারগীস সুলতানা, সৈয়দকাঠী ইউনিয়ন মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কমল কান্তি বিশ^াস, সৈয়দকাঠী ইউনিয়ন মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মিলন কান্তি সরকার প্রমূখ।