২৭শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শনিবার

শিরোনাম
তেলবাহী লড়ি উল্টে গিয়ে আগুন লেগে এক জনের মৃত্যু। ভূমি বিষয়ক তথ্যাদি স্কুলের পাঠ্যক্রমে অন্তর্ভুক্ত করার উদ্যোগ গ্রহণ করো হয়েছে-ভূমিমন্ত্রী মির্জা ফকরুলরা তারেক জিয়ার নির্দেশে জনগনের সাথে প্রতারনা ও তামশা করছে-আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বিগ বার্ড ইন কেইজ: ২৫ শে মার্চ রাতে বঙ্গবন্ধুর গ্রেফতার  ঢাবি ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগে ১ কোটি টাকার বৃত্তি ফান্ড গঠিত হাইকোর্টের রায়ে ডিন পদে নিয়োগ পেলেন যবিপ্রবির ড. শিরিন জয় সেট সেন্টার’ থেকে মিলবে প্রশিক্ষণ, বাড়বে কর্মসংস্থান: পীরগঞ্জে স্পীকার বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবস আগামীকাল টুঙ্গিপাড়ায় যাচ্ছেন রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী, সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন বিশিষ্ট রবীন্দ্র সংগীত শিল্পী সাদি মোহম্মদ আর নেই

চূড়ান্ত হবার পথে ট্রান্সফ্যাট নিয়ন্ত্রণ প্রবিধানমালা

আপডেট: সেপ্টেম্বর ২৫, ২০২১

  • ফেইসবুক শেয়ার করুন

বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ সকল তেল, চর্বি এবং খাদ্যে সর্বোচ্চ ২ শতাংশ ট্রান্সফ্যাট এর সীমা বেঁধে দিয়ে তা সরকারী গেজেটে প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে কার্যকর করার কাজ সমাপ্তির দিকে এগিয়ে নিয়েছে। ২০২৩ সালের মধ্যে খাদ্য শৃঙ্খল থেকে শিল্পোৎপাদিত ট্রান্সফ্যাট নির্মূলের বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা নির্ধারিত লক্ষ্য অর্জন করার জন্যই এ অক্লান্ত প্রচেষ্টা নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের। “খাদ্যদ্রব্যে ট্রান্স ফ্যাটি এসিড নিয়ন্ত্রণ প্রবিধানমালা, ২০২১” প্রবিধানমালা চূড়ান্তকরণ প্রক্রিয়ার বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ (বিএফএসএ) এর সদস্য মঞ্জুর মোর্শেদ বলেন, “খাদ্য মন্ত্রণালয় ইতিমধ্যেই খসড়া প্রবিধানমালাটি চূড়ান্ত করতে ভেটিংয়ের জন্য আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে। অল্প সময়ের মধ্যে ভেটিং প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে। আমরা আশা করছি দ্রুততম সময়ের মধ্যে এটি চূড়ান্ত হবে।”

ট্রান্সফ্যাটঘটিত হৃদরোগে মৃত্যুর সর্বাধিক ঝুঁকিপূর্ণ ১৫টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম বলে জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। সংস্থাটির ২০২০ সালে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, বাংলাদেশে প্রতিবছর হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণকারীর ৪.৪১% মৃত্যুর জন্য দায়ী ট্রান্সফ্যাট। অর্থাৎ, দেশে ৫৭৭৬ জন মানুষ হৃদরোগে অকাল মৃত্যুবরণ করছেন শুধুমাত্র অতিরিক্ত ট্রান্সফ্যাট যুক্ত খাবার গ্রহণের কারণে। প্রতিরোধযোগ্য এই অকাল মৃত্যুসহ হৃদরোগের ঝুঁকি হ্রাস করতে ২০২৩ সালের মধ্যে শিল্প উৎপাদিত ট্রান্সফ্যাট সম্পূর্ণরুপে নির্মূল করার আহ্বান করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।

ট্রান্সফ্যাট মুক্ত বাংলাদেশ গড়তে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের উদ্যোগ নিঃসন্দেহে জনস্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি পদক্ষেপ। “খাদ্যদ্রব্যে ট্রান্স ফ্যাটি এসিড নিয়ন্ত্রণ প্রবিধানমালা, ২০২১”-এ বলা হয়েছে রুমিন্যান্ট বা প্রাণিজ উৎসজাত টিএফএ বাদে চর্বির ইমালসনসহ যেকোনো তেল ও চর্বি, যা এককভাবে বা প্রক্রিয়াজাত খাদ্যের বা যেকোনো খাদ্যের উদ্দেশ্যে অথবা খুচরা ব্যবসা, ক্যাটারিং ব্যবসা, রেস্তোরাঁ, প্রতিষ্ঠান, বেকারি বা যেকোনো খাদ্য স্থাপনার খাদ্য প্রস্তুতের জন্য কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহৃত হয়, এবং প্রক্রিয়াজাত, মোড়কাবদ্ধ, সরাসরি আহার্য খাদ্য (রেডি-টু-ইট) অথবা যেকোনো খাদ্যে ২ শতাংশের বেশি অর্থাৎ প্রতি ১০০ গ্রামে ২ গ্রামের অধিক টিএফএ থাকলে তা বিক্রয়, বিতরণ, সংরক্ষণ, উৎপাদন, প্রক্রিয়াজাতকরণ, বিপণন এবং আমদানি করা যাবে না। এছাড়া, মোড়কজাত খাদ্যের লেবেলে অবশ্যই ট্রান্স ফ্যাটি এসিড ও পিএইচও সম্পর্কিত তথ্য ঘোষণা করতে হবে।

খাদ্যে ট্রান্সফ্যাটের প্রধান উৎস পারশিয়ালি হাইড্রোজেনেটেড অয়েল বা পিএইচও, যা বাংলাদেশে ডালডা বা বনস্পতি ঘি নামেই সুপরিচিত। সাধারণত বেকারি পণ্য, প্রক্রিয়াজাত ও প্যাকেটজাত খাবার, ভাজা পোড়া স্ন্যাক্স এবং হোটেল রেস্তোরাঁ ও সড়কসংলগ্ন দোকানে খাবার তৈরিতে পিএইচও বা ডালডা ব্যবহার করা হয়ে থাকে। ঢাকার শীর্ষস্থানীয় পিএইচও বা ডালডা ব্র্যান্ডসমূহের মোট ২৪টি নমুনা বিশ্লেষণ করে সম্প্রতি পরিচালিত এক গবেষণার ফলাফলে ৯২ শতাংশ নমুনায় ডব্লিউএইচও সুপারিশকৃত সর্বোচ্চ ২% মাত্রার চেয়ে বেশি ট্রান্স ফ্যাট (ট্রান্স ফ্যাটি এসিড) পাওয়া গিয়েছে এবং ডব্লিউএইচও’র সুপারিশকৃত মাত্রার তুলনায় সর্বোচ্চ ১০ গুণেরও বেশি পর্যন্ত ট্রান্সফ্যাট পাওয়া গিয়েছে।

ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হসপিটাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটের ইপিডেমিওলজি অ্যান্ড রিসার্চ বিভাগের অধ্যাপক ডা. সোহেল রেজা চৌধুরী বলেন, “আমাদের গবেষকদল ঢাকার ডালডা নমুনার ৯২ শতাংশে ডব্লিউএইচও সুপারিশকৃত ২% মাত্রার চেয়ে বেশি ট্রান্সফ্যাট (ট্রান্স ফ্যাটি এসিড) পেয়েছেন, যা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। ট্রান্স ফ্যাটি এসিড (টিএফএ) বা ট্রান্সফ্যাট মানব স্বাস্থ্যের জন্য একটি বিষাক্ত এবং অযাচিত খাদ্য উপাদান। ট্রান্সফ্যাট এক ধরণের ফ্যাট বা স্নেহ জাতীয় খাদ্য উপাদান যা রক্তের এলডিএল বা “খারাপ কোলেস্টেরল” বৃদ্ধি করে, অপরদিকে এইচডিএল বা “ভালো কোলেস্টেরল”-এর মাত্রা কমিয়ে দেয়। অতিরিক্ত ট্রান্স ফ্যাট গ্রহণের ফলস্বরূপ রক্তবাহী ধমনিতে খারাপ কোলেস্টেরল জমা হয়ে রক্তচলাচলে বাধা সৃষ্টি করে। ফলে হৃদরোগের ঝুঁকি বেড়ে যায়, যা অকাল মৃত্যুর অন্যতম কারণ। এছাড়াও মাত্রাতিরিক্ত ট্রান্সফ্যাট গ্রহণ উচ্চহারে হৃদরোগ, হৃদরোগজনিত মৃত্যু, স্মৃতিভ্রংশ (ডিমেনশিয়া) এবং স্বল্প স্মৃতিহানি (কগনিটিভ ইমপেয়ারমেন্ট) জাতীয় রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বৃদ্ধি করে।”

  • ফেইসবুক শেয়ার করুন
     
Website Design and Developed By Engineer BD Network