৮ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, বুধবার

শিরোনাম
তেলবাহী লড়ি উল্টে গিয়ে আগুন লেগে এক জনের মৃত্যু। ভূমি বিষয়ক তথ্যাদি স্কুলের পাঠ্যক্রমে অন্তর্ভুক্ত করার উদ্যোগ গ্রহণ করো হয়েছে-ভূমিমন্ত্রী মির্জা ফকরুলরা তারেক জিয়ার নির্দেশে জনগনের সাথে প্রতারনা ও তামশা করছে-আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বিগ বার্ড ইন কেইজ: ২৫ শে মার্চ রাতে বঙ্গবন্ধুর গ্রেফতার  ঢাবি ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগে ১ কোটি টাকার বৃত্তি ফান্ড গঠিত হাইকোর্টের রায়ে ডিন পদে নিয়োগ পেলেন যবিপ্রবির ড. শিরিন জয় সেট সেন্টার’ থেকে মিলবে প্রশিক্ষণ, বাড়বে কর্মসংস্থান: পীরগঞ্জে স্পীকার বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবস আগামীকাল টুঙ্গিপাড়ায় যাচ্ছেন রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী, সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন বিশিষ্ট রবীন্দ্র সংগীত শিল্পী সাদি মোহম্মদ আর নেই

বরিশালে অর্ডার ছাড়া মেলে না ঈদ কার্ড

আপডেট: এপ্রিল ২৭, ২০২২

  • ফেইসবুক শেয়ার করুন

আধুনিক সভ্যতা আর প্রযুক্তির ছোঁয়ায় হারিয়ে যেতে বসেছে বর্তমান সময়ের অনেক কিছুই। তেমনি হারিয়ে যেতে বসেছে এক সময়ের বহুল প্রচলিত ঈদ শুভেচ্ছা কার্ড। একটা সময় ঈদ কার্ড ছাড়া শুভেচ্ছা বিনিময় ছিল প্রায় অকল্পনীয়। আর এখন অনেকেই আছেন, যারা ঈদ কার্ড সম্পর্কে জানেনই না।

সোমবার (২৫ এপ্রিল) বরিশাল নগরীর কয়েকটি কার্ডের দোকান ঘুরে দেখা যায়, শুধু বিয়ের কার্ড ছাড়া অন্য কোনো কার্ড বিক্রি করছেন না বিক্রেতারা।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বরিশালে এক সময় কার্ডের জন্য বিখ্যাত ছিল নগরীর কাকলির মোড় সোবাহান কমপ্লেক্সের মধ্যে আজাদ প্রোডাক্টস। সেই ৮০-৯০ দশক থেকে শুরু করে বিংশ শতাব্দী পর্যন্ত ছিল আজাদ প্রোডাক্টস এর জয়জয়কার। পরে আজাদ প্রোডাক্টস-এর বরিশাল শাখার ম্যানেজার শাহ আলম খান নিজেই খান প্রোডাক্টস নামে ওই মার্কেটে একটি দোকান চালু করেন। তখনও বরিশালে যেকোনো উৎসব পার্বনে কার্ডের ব্যবহার ছিল লক্ষণীয়। বন্ধু-বান্ধব, আত্মীয়-স্বজন, শিক্ষকদের জন্য ঈদ, কোরবানি, হালখাতা, নিউ ইয়ারের উপহার হিসেবে কার্ড ছিল অন্যতম উপহার।

এখন আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহারে সবাই মোবাইলের এসএমএস ও ম্যাসেঞ্জারের মাধ্যমে শুভেচ্ছা বিনিময় করছেন। ফলে কার্ড দিয়ে শুভেচ্ছা জানানো এখন অনেকের কাছেই অতীত হয়ে গেছে।
eid card barishalনগরীর ফকির বাড়ি রোডস্থ মৌসুমী প্রোডাক্টস এর স্বত্বাধিকারী মুন্না ঢাকা মেইলকে বলেন, এখন দোকানে বিয়ের কার্ড ছাড়া কোনো কার্ড চলে না। তবে কেউ যদি ঈদ কার্ডের অর্ডার দেয় তাহলে আনিয়ে দেওয়া যাবে। তাছাড়া দোকানে এখন আর ঈদ কার্ড রাখি না। এমনকি কাউকে দেখানোর জন্য ঈদ কার্ডের স্যাম্পলও নেই।

এ ব্যবসায়ী আরও বলেন, কেউ যদি ঈদ কার্ডের অর্ডার করতে আসে তাহলে তাকে অনলাইনে ডিজাইন দেখাই, তারপর পছন্দ হলে অর্ডার নিই।

বরিশাল জেলা ক্রিকেট টিমের প্লেয়ার শাহারিয়ার রিপন ঢাকা মেইলকে বলেন, আমার শৈশব কৈশোরের স্মৃতির এক উল্লেখযোগ্য অংশ ছিল আজাদ প্রোডাক্টস। আমাদের জিলা স্কুলের খুব কাছেই সোবহান কমপ্লেক্সে ছিল আজাদ প্রোডাক্টসের শোরুম। স্কুল ছুটি শেষে আমাদের সোজা গন্তব্য ছিল আজাদ প্রোডাক্টসে। বন্ধু-বান্ধব সবাই মিলে ভিড় করতাম ওইখানে। নতুন বছরের জন্য কার্ড ডায়েরি আর ক্যালেন্ডার কিনতেই হতো আজাদ প্রোডাক্টস থেকে। আর বছরজুড়ে রেসলিং, ক্রিকেট ও বলিউড স্টারদের ছোট ছোট কার্ড কেনার স্মরণীয় মুহূর্ত এখনও মনে পড়ে।

বরিশাল নগরীর সোবাহান কমপ্লেক্সের খান প্রোডাক্টসের বিক্রয়কর্মী রনি খান ঢাকা মেইলকে বলেন, এখন আর কেউ আগের মতো ঈদে শুভেচ্ছা বিনিময়ের জন্য কার্ড কিনতে আসে না। তাই এসব কার্ড এখন আর দোকানে উঠাই না। এখন শুধু বিয়ের কার্ড চলে। তাই পুরো দোকান শুধু বিয়ের কার্ড দিয়ে সাজানো। আমরা সংশয়ে আছি যে কবে যেন এই কার্ডও হারিয়ে যায় সমাজ থেকে।
eid card barishalঈদ শুভেচ্ছা কার্ড কিনতে আসা স্থানীয় একজন ঢাকা মেইলকে বলেন, প্রশাসনিক, রাজনৈতিক ও সামাজিক অঙ্গনের ব্যক্তিবর্গদের ঈদ শুভেচ্ছা জানানোর জন্য প্রতি বছর কিছু কার্ড কিনতে হয়। তবে গত কয়েক বছর ধরে দোকানে রেডিমেড কোন কার্ড পাই না। তাই কার্ডের লেখা ও ডিজাইন দিয়ে ঢাকা থেকে প্রিন্ট করিয়ে আনি।

বরিশালে কার্ডের জগতের আদি ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠান আজাদ প্রোডাক্টস বরিশাল শোরুমের ম্যানেজার বেল্লাল হোসেন ঢাকা মেইলকে বলেন, বরিশালে এখন আমরাই কিছু গ্রিটিংস কার্ড রাখি। তাও এখন আর আগের মতো চলে না।

তিনি আরও বলেন, একটা সময় বিভিন্ন উৎসব পার্বণ এলে সকল এলাকার অলিগলি কার্ডের দোকানে ছেয়ে যেত। শহরের অনেক বড় বড় দোকানেও কার্ড বিক্রি হত। কিন্তু কালের পরিক্রমায় এখন তা অতীতে পরিণত হয়েছে। প্রযুক্তির কল্যাণে অনেকে ব্যবসা ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন। তাছাড়া বরিশালে এখন হাতে গোনা দুই তিনটা কার্ডের দোকান অবশিষ্ট আছে। তাও ব্যবসায়িকভাবে লোকসানের মুখে কোনোমতে টিকে আছে।

  • ফেইসবুক শেয়ার করুন
     
Website Design and Developed By Engineer BD Network