পর্যটন একটি বহুমুখী শিল্প। ২৭ সেপ্টেম্বর বিশ্ব পর্যটন দিবস। অন্যান্য দেশগুলোর মতো বাংলাদেশেও নানা কর্মসূচীর মধ্য দিয়ে পালন করা হয় বিশ্ব পর্যটন দিবস। ১৯৭০ সালে বিশ্ব পর্যটন সংস্থার সংবিধি পাশ করা হয়। ১৯৮০ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর এ সংবিধি কার্যকর হয়। সংবিধি কার্যকরের দিন থেকেই বিশ্ব পর্যটন সংস্থার সদস্য রাষ্ট্রসমূহ আনুষ্ঠানিকভাবে দিবসটি পালন করে আসছে।
বিশ্ব পর্যটন সংস্থার উদ্দশ্য হচ্ছে- পর্যটন শিল্পের টেকসই উন্নয়নের মাধ্যমে সদস্য দেশসমূহের মধ্যে অর্থনৈতিক, সামাজিক, পরিবেশগত ও সাংস্কৃতিক সমৃদ্ধি আনায়ন করা। দিবসটি বিশ্ববাসীর মধ্যে শান্তি, সমৃদ্ধি, সৌহার্দ্য, সম্প্রীতি ও ভ্রাতৃত্ব বোধ তৈরির পাশাপাশি সচেতনতা সৃষ্টিতেও ব্যাপক ভূমিকা রাখে। বহুমুখী এ শিল্প বিশ্বের কাছে তুলে ধরতে আলোকচিত্র ও আলোকচিত্রীরা ব্যাপক ভূমিকা পালন করে আসছে। মহিউদ্দিন অপুর লেখা তথ্যে আজ তেমনি একজন আলোকচিত্রীর কথা জানাবো আপনাদের।
আরিফ রহমানঢাকার বাইরে উপকূলীয় আলোকচিত্রী আরিফ রহমান। বরগুনা জেলার আমতলার পার এলাকার হাইস্কুল সড়কের মরহুম মো. মোখলেসুর রহমানের দুই ছেলে আর পাঁচ মেয়ের মধ্যে আরিফ রহমান পঞ্চম। চাকরির সুবাদে আরিফ রহমান বাস করেন বরিশালে। তার সাথে কথা বলে জানা যায়, ছবি তোলার জন্য শখেরবশে তিনি ক্যামেরা হাতে নিয়েছিলেন সেই ছোটবেলায়। তবে শখটা যে কখন নেশায় পরিণত হয়েছে তা তিনি নিজেও জানেননা।
ছবি তোলার পাশাপাশি অজানাকে জানার আগ্রহ ও প্রকৃতির প্রতি ভালোবাসা আরিফ রহমানকে আকৃষ্ট করেছে ঘুরে বেড়াতে। তাই ছবি তোলার পাশাপাশি তিনি ঘুরে বেড়ান উপকূল থেকে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে। শুধু ছবি তোলা আর ঘোরাঘুরির মধ্যেই তিনি সীমাবদ্ধ রাখেননি নিজেকে। আবিস্কারও করছেন নতুন নতুন সৌন্দর্যময় স্থান। পর্যটকদের কাছে সেসব স্থানকে পরিচিত করার জন্য করছেন নানান আয়োজন। পর্যটকদের কাছে দেশের পর্যটন শিল্পের বিভিন্ন বার্তা পৌছে দিতে এরইমধ্যে তিনি কাজ করেছেন দৈনিক প্রথম আলো ও দ্য ডেইলি স্টারসহ বেশকয়েকটি সংবাদপত্রে।
—পেশাগত কারনে আরিফ রহমানকে ঘুরে বেড়াতে হয় বিভিন্ন স্থানে। সমস্যা ও সম্ভানার নানা বিষয় উঠে আসে তার ছবিতে। কখনও ব্যস্ত নাগরীর জীবনধারার সাথে সাথে নাগরিক যন্ত্রণা ফুটে ওঠে তার ছবিতে, কখনও সবুজ ঘেরা নিভৃত কোন গ্রামে মানুষের জীবনধারার সাথে নিসর্গ ও প্রকৃতির সুন্দর দিকগুলো ফুটে ওঠে একদম জীবন্ত হয়ে। তার ছবিতে জীবনের সুখ, দুঃখ, হাসি, কান্নারও অনুলিপি চিত্রিত হয় সুনিপুণ ভাবে।
—পেশাগত ব্যস্ততার মাঝেও আরিফ রহমানের দৃষ্টি থাকে উপকূলীয় পেয়ারার গ্রাম ও পেয়ারার ভাসমান বাজারগুলোতে। ব্যস্ততার মাঝেও ছুটে যান দেশের বিভিন্ন শাপলা শালুকের বিস্তির্ণ বিলে। তাছাড়া সময় পেলেই তিনি বেরিয়ে পড়েন জানা অজানায় ভ্রমণে। সমুদ্র সৈকত কুয়াকাটা, চর বিজয়, বরগুনার শুভ সন্ধ্যা সমুদ্রসৈকত, হরিণঘাটা, লালদিয়ার চর, বিহঙ্গ দ্বীপ এবং সুন্দরবন সংলগ্ন দুবলারচরসহ সমুদ্র সৈকতের বিভিন্ন স্থানে স্বল্প খরচে ঘুরে বেড়াতে যে কেউ পরামর্শ নিতে পারেন তার কাছ থেকে। বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মকে স্বল্প খরচে ভ্রমণের পরিকল্পনা ও নির্দেশনা দেন তিনি। এককথায় পর্যটন শিল্পে দেশের অপার সম্ভাবনাকে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে দিতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ আলোকচিত্রী আরিফ রহমান।
জল তরণীআরিফ রহমান বলেন, কর্মব্যস্ত দৈনন্দিন জীবনের ক্লান্তি কাটাতে ভ্রমন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ভ্রমনে বাড়ে জ্ঞানের পরিসর, বাড়ে আত্মবিশ্বাস। সময় ও সুযোগ পেলে ছুটে যাই দেশী বিদেশী পর্যটকদের কাছে। সারা বিশ্বের পর্যটকদের কাছে দেশের অপার সম্ভাবনাকে ছড়িয়ে দিতে ক্যামেরা নিয়ে ঘুরে বেড়াতে ভালোই লাগে। নিজ জেলা বরগুনাতে পর্যটকদের ভ্রমনের সুবিধার্থে ও পর্যটকদের কাছে জেলার নিসর্গ সৌন্দর্য তুলে ধরতে চালু করেছি ‘জল তরণী’ নামের নৌভ্রমণ সেবা।