আপডেট: অক্টোবর ২১, ২০২০
ভৌগোলিক অবস্থান, জাতিগত পার্থক্য, ঐতিহ্য সংস্কৃতি, ধর্মিয় রীতিনীতি এবং ধর্মিয় ভিন্নতার কারনে বিশ্বের মানুষের মধ্য অভিবাদনেও ভিন্নতা রয়েছে।
সালাম ইসলামের সর্বোত্তম অভিবাদন
সালাম আরবি শব্দ। সালাম অর্থ শান্তি, প্রশান্তি কল্যাণ, দোয়া, আরাম, আনন্দ, তৃপ্তি। সালাম হলো একটি সম্মানজনক, অভ্যর্থনামূলক, অভিনন্দনজ্ঞাপক, শান্তিময় উচ্চমর্যাদা সম্পন্ন পরিপূর্ণ ইসলামী অভিবাদন। আল্লাহ তাআলা প্রথমে আদি মানব হজরত আদম (আ.)–কে সালাম শিক্ষা দেন। সালাম দেওয়া সুন্নত; সালামের জবাব দেওয়া ওয়াজিব।
‘আস্-সালাম’ আল্লাহর সুন্দর নামসমূহের মধ্যে অন্যতম। -সূরা হাশর: ২৪
হাদিসে বর্ণিত, আল্লাহ তাআলা হজরত আদম (আ.)–কে সৃষ্টি করে বলেন, যাও ফেরেশতাদের সালাম দাও এবং তারা তোমার সালামের কী উত্তর দেয়, মন দিয়ে শোনো। এটিই হবে তোমার এবং তোমার সন্তানদের সালাম। সে অনুযায়ী হজরত আদম (আ.) গিয়ে ফেরেশতাদের বলেন, ‘আসসালামু আলাইকুম’, অর্থ ‘আপনাদের ওপর শান্তি বর্ষিত হোক।’ ফেরেশতারা উত্তরে বলেন, ‘আসলামু আলাইকা ওয়া রহমাতুল্লাহ’, অর্থ ‘আপনার ওপর শান্তি এবং আল্লাহর রহমত বর্ষিত হোক।’ -মিশকাত: ৪৬২৮
অন্যের গৃহে সালাম না দিয়ে প্রবেশ করা নিষেধ। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেছেন, ‘হে মুমিনগণ! তোমরা নিজেদের গৃহ ছাড়া অন্য গৃহে প্রবেশ করো না, যে পর্যন্ত আলাপ-পরিচয় না করো এবং গৃহবাসীদের সালাম না করো। এটাই তোমাদের জন্য উত্তম, যাতে তোমরা স্মরণ রাখো।’ -সূরা নূর: ২৭
সালাম এভাবে দেওয়া মুস্তাহাব, ‘আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ’। উত্তরদাতা বলবেন, ‘ওয়া আলাইকুমুস সালাম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারকাতুহ।’ সালাম ও জবাবে বহুবচন শব্দ ব্যবহার করবে, যদিও উপস্থিত ব্যক্তি একজন হন। যতবার দেখা হবে, ততবার সালাম দিতে হবে।’ -আবুদাউদ
‘নিশ্চয় আল্লাহর নিকট উত্তম ব্যক্তি সে, যে মানুষকে আগে সালাম দেয়।’ -আবুদাউদ
‘‘যখন তোমরা গৃহে প্রবেশ করবে তখন তোমরা সালাম দিবে। এ হবে আল্লাহর নিকট হতে কল্যাণময় ও পবিত্র অভিবাদন’’। -সূরা নূর: ৬১
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘‘যখন তোমরা কোনো মজলিশে পৌঁছাবে তখন তুমি সালাম দেবে। আর যখন তুমি মজলিশ থেকে উঠে দাঁড়াবে, তখনো সালাম দেবে। প্রথম সালাম শেষের সালাম থেকে অধিক গুরুত্ব বহন করে না’’। -আবুদাউদ ও তিরমিজি
চিঠি বা যেকোনো মাধ্যমে সালাম দিলেও তার উত্তর দেওয়া ওয়াজিব। দূতের মাধ্যমে সালাম পাঠালে মুস্তাহাব হলো দূতকেও সালাম দেওয়া এবং এভাবে বলা, ‘ওয়া আলাইকা ওয়া আলাইহিস সালাম।’
“যখন তোমাদেরকে অভিবাদন করা হয়, তোমরাও অভিবাদন জানাও তারচেয়ে উত্তমভাবে অথবা তারই মতো করে ফিরিয়ে দাও।” -সূরা নিসা: ৮৬
বেশিরভাগ আলেমগণের মতে-
“আসসালামু ‘আলাইকুম” এর জবাবে বলা উচিত “ওয়া’আলাইকুমুসসালাম ওয়া রহমাতুল্লাহ”।
“আসসালামু ‘আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ”র জবাবে বলতে হবে “ওয়া’আলাইকুম আসসালাম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু”।
“আসসালামু ‘আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু”র জবাবে এর চেয়ে উচ্চস্বরে ও আনন্দিত স্বরে বলতে হবে “ওয়া’আলাইকুম আসসালাম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু”।
এখন পুরো পৃথিবী যেখানে আমাদের শেখায় পরিস্কার পরিচ্ছন্ন থাকুন। অভিধান শেখায় শুদ্ধরুপে লিখুন এবং বলুন। বিভিন্ন ট্রান্সপোর্টে লেখা থাকে, ভদ্রতা বজায় রাখুন ভদ্রভাবে কথা বলুন। সেখানে একজন মানুষ যদি সহিহ্ শুদ্ধভাবে কাউকে অভিবাদনে সালাম দেয় বিদায় আল্লাহ হাফেজ বলে সেটা কিভাবে জঙ্গি’র লক্ষন হয়?
শুদ্ধ উচ্চারন কখনো জঙ্গিবাদ হতে পারে না। জঙ্গিদের কোনো ধর্ম নেই। আছে কেবল সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড। কোনো ধর্মকে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড হিসেবে আখ্যা দেওয়াকে নৈরাজ্য ছাড়া কিছুই নেই। মানবতাহীন ধর্ম বিদ্বেষীদের এধরনের কর্মকাণ্ড কখনও গ্রহণ করা যাবে না। এরা দেশ এ জাতির শত্রু।
জিয়াদ মল্লিক
ইসলামিক ইতিহাস বিভাগ, ( ১৯-২০ )
বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়।