৬ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, সোমবার

শিরোনাম
তেলবাহী লড়ি উল্টে গিয়ে আগুন লেগে এক জনের মৃত্যু। ভূমি বিষয়ক তথ্যাদি স্কুলের পাঠ্যক্রমে অন্তর্ভুক্ত করার উদ্যোগ গ্রহণ করো হয়েছে-ভূমিমন্ত্রী মির্জা ফকরুলরা তারেক জিয়ার নির্দেশে জনগনের সাথে প্রতারনা ও তামশা করছে-আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বিগ বার্ড ইন কেইজ: ২৫ শে মার্চ রাতে বঙ্গবন্ধুর গ্রেফতার  ঢাবি ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগে ১ কোটি টাকার বৃত্তি ফান্ড গঠিত হাইকোর্টের রায়ে ডিন পদে নিয়োগ পেলেন যবিপ্রবির ড. শিরিন জয় সেট সেন্টার’ থেকে মিলবে প্রশিক্ষণ, বাড়বে কর্মসংস্থান: পীরগঞ্জে স্পীকার বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবস আগামীকাল টুঙ্গিপাড়ায় যাচ্ছেন রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী, সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন বিশিষ্ট রবীন্দ্র সংগীত শিল্পী সাদি মোহম্মদ আর নেই

ঘুর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে উপকুলীয় এলাকার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত

আপডেট: মে ২৫, ২০২১

  • ফেইসবুক শেয়ার করুন

আমতলী (বরগুনা) প্রতিনিধি।
ঘুর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে সাগর ও পায়রা নদীতে পানি বৃদ্ধি পেয়ে উপকুলীয় এলাকা আমতলী ও তালতলীর নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এতে নিম্নাঞ্চলের ঘর-বাড়ী ও পুকুর তলিয়ে গেছে। মানুষ বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধ এবং পাশর্^বর্তী সাইক্লোণ সেল্টারে আশ্রয় নিয়েছে। আমতলী উপজেলার ৩০ হাজার মানুষ বাধ ভেঙ্গে পানিতে প্লাবিত হওয়ার আতঙ্কে রয়েছে।
আমতলী পানি উন্নয়ন বোর্ড সুত্রে জানাগেছে, ঘুর্ণিঝড় ইয়াস ও আমবশ্যার জোঁর প্রভাবে সাগর ও পায়রা নদীতে স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে বিপদসীমার ৩ ফুট উপরে পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় উপকুলীয় এলাকার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে ঘর-বাড়ী ও পুুকুর তলিয়ে গেছে। কুকুয়া ইউনিয়নে পুর্ব কৃষ্ণনগর এলাকার বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধ ভেঙ্গে এলাকা তলিয়ে গেছে বলে জানান ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ বোরহান উদ্দিন মাসুম তালুকদার। তিনি ওই বাধ সংস্কার কাজ শুরু করেছেন। মানুষ বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধ এবং পাশর্^বর্তী সাইক্লোণ সেল্টারে আশ্রয় নিয়েছে। ঘুর্ণিঝড়ের প্রভাবে মঙ্গলবার সকাল থেকে উপকুলীয় অঞ্চলে গুমোট আবহাওয়া বিরাজ করছে। হালকা দমকা বাতাসের সাথে ভারি বজ্র বৃষ্টি হয়েছে।
এদিকে ঘুর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে পায়রা নদীতে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় উপজেলার আড়পাঙ্গাশিয়া ইউনিয়নের বালিয়াতলী-পশুরবুনিয়া ও ডাঙ্গার খাল এলাকায় ৫’শ মিটার, চাওড়া ইউনিয়নের পশ্চিম ঘটখালী এলাকায় ২’শ মিটার, গুলিশাখালী ইউনিয়নের আঙ্গুলকাটা এলাকায় ৩’শ মিটার, হলদিয়া ইউনিয়নের পুর্ব চিলা এলাকায় ২’শ মিটার বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধ অধিক ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। ঘুর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে ঝুকিপূর্ণ বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধ ভেঙ্গে পানিতে এলাকা তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছে স্থানীয়রা। এতে ঝুঁকি নিয়ে অন্তত ৩০ হাজার মানুষ আতঙ্কে বাঁধ এলাকায় বসবাস করছে।
আমতলী ঘুর্ণিঝড় প্রস্তুতি কেন্দ্রে সুত্রে জানাগেছে, ঘুর্ণিঝড় ইয়াস পায়রা সমুদ্র বন্দর থেকে ৪৮০ কিলোমিটার দুরে বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে। উপকুলীয় অঞ্চল আমতলী ও তালতলীতে দুই নম্বর হুসিয়ারী সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। সাগরে ৬৫ দিনের মাছ শিকার বন্ধ থাকায় জেলেরা কিনারে অবস্থান করছে। কিন্তু মাছ শিকারের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে সাগরে ট্রলার ও জেলে নৌকা অবস্থান করে থাকলে তাদের নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে বলা হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, দু’উপজেলার সাগর ও পায়রা নদী সংলগ্ন বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধের বাহিরে বালিয়াতলী, ঘোপখালী, পশুরবুনিয়া, আড়পাঙ্গাশিয়া, লোচা, আমতলী পৌরসভার ফেরিঘাট, শ্মশাণঘাট, পানি উন্নয়ন বোর্ড, আঙ্গুলকাটা, গুলিশাখালী, গুলিশাখালীর জেলে পল্লী, পঁচাকোড়ালিয়া, ছোটবগী, মৌপাড়া, গাবতলী, চরপাড়া, তালতলী, খোট্টারচর, তেঁতুলবাড়িয়া, জয়ালভাঙ্গা, নলবুনিয়া, ফকিরহাট, নিদ্রাসকিনা ও আমখোলাসহ উপকুলের অধিকাংশ বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধের বাহিরের নিম্নাঞ্চল পানিয়ে তলিয়ে গেছে। ওই নিম্নাঞ্চলে বসবাসরত ঘর-বাড়ী ও পুকুর তলিয়ে গেছে। মানুষ বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধ এবং পাশর্^বর্তী সাইক্লোণ সেল্টারে আশ্রয় নিয়েছে।
তালতলী ফকিরহাট বাজারের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির সহ-সভাপতি ও ইউপি সদস্য মোঃ ছালাম হাওলাদার বলেন, ঘুর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাব সাগর ও নদী উত্তাল রয়েছে। স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে পানি বৃদ্ধি পেয়ে বন্যা নিয়ন্ত্রন বাধের বাহিরের নিম্নাঞ্চল তলিয়ে গেছে। নিম্নাঞ্চলের মানুষ বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধে আশ্রয় নিয়েছে।
গাবতলী আবাসনের আব্দুল ছত্তার হাওলাদার, জালাল ও লাইলি, বলেন, জোয়ারের পানিতে আবাসন তলিয়ে গেছে। পরিবার পরিজন নিয়ে বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধের উপরে অবস্থান করছি।
আমতলী পৌর শহরের আমুয়ার চর এলাকার আব্দুর রাজ্জাক বলেন, পানিতে ঘর-বাড়ী তলিয়ে গেছে।
আমতলী ঘুর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচী সহকারী পরিচালক এম মাহতাবুল বারী বলেন, ঘুর্ণিঝড় ইয়াস পায়রা সমুদ্র বন্দর থেকে ৪৮০ কিলোমিটার দুরে বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে। ইয়াস মোকাবেলায় ইতিমধ্যে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। মানুষকে নিরাপদে আনতে ইতিমধ্যে সেচ্ছাসেবকরা প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আসাদুজ্জামান বলেন, ঘুর্ণিঝড় ইয়াস মোকাবেলায় মানুষকে সচেতন ও জেলেদের নিরাপদে থাকতে বলা হয়েছে। উপজেলার সকল সাইক্লোণ সেল্টার খোলা রাখা রয়েছে। সাইক্লোণ সেল্টারগুলো পরিষ্কার পরিছন্ন করে বসবাস উপযোগী করা হয়েছে।
বরগুনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ কায়সার আলম বলেন, ঘুর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে পায়রা নদীতে বিপদসীমার উপরে ৩ ফুট পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। তিনি আরো বলেন, ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধ এলাকা রক্ষায় কাজ চলছে।

  • ফেইসবুক শেয়ার করুন
     
Website Design and Developed By Engineer BD Network