আপডেট: জানুয়ারি ২৩, ২০২২
নিজস্ব প্রতিবেদক
আবহাওয়ার খেয়ালী আচরনের কারণে বরিশালে হুমকীর মুখে পড়েছে রবিশষ্য। কয়েকদিন ধরে আবহাওয়ার প্রভাবে কখনো বৃষ্টি হচ্ছে, কখনো করা রোদ ও আবার কখনো মেঘল ভাব রয়েছে। তার মধ্যে প্রতিদিনই পড়ছে ঘনকুয়াশা। বরিশাল খামার বাড়ি জানিয়েছে আগে থেকেই বরিশাল ২ মাস পিছিয়ে রয়েছে ফসল উৎপাদনে। তার মধ্যে বৃস্টি হলে সরিষা, মুসুরী, খেসারীসহ রবি শষ্য ক্ষতি হতে পারে বলে জানান বরিশাল জেলা কৃষি সম্পসারন অধিদপ্তরের উপ পরিচালক হারুন অর রশীদ।
জানা গেছে, অসময়ের বৃষ্টিতে সরিষা, খেসারী ও মুসুরীসহ টমেটোতে (সিট) কালচে দাগ ও পচন দেখা দিয়েছে। ফলে পুনরায় ক্ষেতে কীটনাশক প্রয়োগ করছেন চাষিরা। এতে বেড়ে যাচ্ছে খরচ। কৃষকরা জানিয়েছে, এক বিঘা জমিতে সেচ, জমি প্রস্তুত, কীটনাশক প্রয়োগ, বীজ বপন, লাগানো ও শ্রমিকের মুজরিসহ কৃষকের ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা খরচ হয়। আর লিজের জমি হলে খরচ বেড়ে দাঁড়ায় দিগুণের বেশি। তবে এবার বৃষ্টিতে ফসলে ছোট ছোট কালচে দাগের পাশাপাশি পচন দেখা দিয়েছে। যার কারণে এখন দামও কম পাচ্ছেন কৃষকরা।
বরিশাল কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, পরিবেশের ভারসম্য রক্ষায় ভূ-গর্ভস্থ পানির ব্যবহার হ্রাস করতে কাজ করছে কৃষি বিভাগ। কৃষকদের সেচ নির্ভর বোরো ধানের আবাদ কমিয়ে আমন সহ অন্যান্য হাইব্রীট জাতের ধানের চাষ বাড়াতে উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। কয়েক বছর ধরে জলবায়ুর বিরূপ প্রভাবে আমন মৌসুমে ধান আবাদে ক্ষতির মুখে পড়েছেন অনেক কৃষক। তার মধ্যে গত এক সপ্তাহ ধরে আবহাওয়া খেয়ালী আচরনে কারণে রবি শষ্যে ক্ষতির সম্মুখিন করছে।
বরিশাল স্থানীয় আবহাওয়া অফিস জানান, কয়েক বছর ধরে এ অঞ্চলের অনেক স্থানে জলবায়ুর বিরূপ প্রভাব জানান দিচ্ছে। হঠাৎ করে তাপমাত্রা হ্রাস-বৃদ্ধির ফলে পরিবেশ এবং প্রাণিকুলের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। এ প্রভাব মানব দেহের কথা চিন্তা করি তাহলে দেখা যাবে নানা ধরনের অসুখে আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ। আবার যদি এ অঞ্চলের কৃষি অর্থনীতির কথা বলি তাহলে দেখা যাবে অতিবৃষ্টি এবং অনাবৃষ্টিতে উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে।
বরিশাল জেলার বিভিন্ন উপজেলার চাষি মহসিন, হাবিব, করম আলী, হারেজ আলী ও রিয়াজ বলেন, এই আবহাওয়ার কারণে আমাদের ফসলে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। আবহাওয়া ভালো না হলে এর পরিনতি আরো খারাপের দিকে যাবে। মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার আন্ধারমানিক ইউনিয়নের আজিমপুর গ্রামে কৃষক ও আজিমপুর সরকারি প্রাথমিক বিধ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হাসান মাহমুদ সাঈদ জানান, গত কয়েকদিনের আবাওয়ার কারণে কখনো বৃস্টি হচ্ছে, কখনো রোদ উঠছে। তার মধ্যে পড়ছে ঘন কুয়াশা। এর ফলে নানা ধরণের পোকা বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফসলের পাতা পুরে যাচ্ছে। ছাত্রাকের আক্রমন দেখা দিচ্ছে। আর এই পোকার হাত থেকে রক্ষার জন্য কিটনাশক ছিটানো হয়। কিন্তু এই কিটনাশনের কারণে ফল ও ফুলে প্রভাব ফেলে। যার কারণে উৎপাদন ব্যহত হচ্ছে। তিনি জানান, তার প্রায় ২ সহস্রাধিক বারো মাসি তরমুজে এই প্রভাব দেখা দিয়েছে। ফসল উৎপাদন কমে গেছে।
এ ব্যাপারে বরিশাল কৃষি সম্পসারন অধিদপ্তরের উপ পরিচালক হারুন অর রশীদ জানান, এই আবহাওয়ার কারণে সব ধরনের রবি শষ্য ক্ষতির সম্মুখিন হবে। বিশেষ করে সরিষা, মসুরের ডালে এই প্রভাব বেশি দেখা দিয়েছে। আবহাওয়া স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত এই প্রভাব বিরাজ করবে। ##