৩০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, মঙ্গলবার

শিরোনাম
তেলবাহী লড়ি উল্টে গিয়ে আগুন লেগে এক জনের মৃত্যু। ভূমি বিষয়ক তথ্যাদি স্কুলের পাঠ্যক্রমে অন্তর্ভুক্ত করার উদ্যোগ গ্রহণ করো হয়েছে-ভূমিমন্ত্রী মির্জা ফকরুলরা তারেক জিয়ার নির্দেশে জনগনের সাথে প্রতারনা ও তামশা করছে-আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বিগ বার্ড ইন কেইজ: ২৫ শে মার্চ রাতে বঙ্গবন্ধুর গ্রেফতার  ঢাবি ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগে ১ কোটি টাকার বৃত্তি ফান্ড গঠিত হাইকোর্টের রায়ে ডিন পদে নিয়োগ পেলেন যবিপ্রবির ড. শিরিন জয় সেট সেন্টার’ থেকে মিলবে প্রশিক্ষণ, বাড়বে কর্মসংস্থান: পীরগঞ্জে স্পীকার বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবস আগামীকাল টুঙ্গিপাড়ায় যাচ্ছেন রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী, সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন বিশিষ্ট রবীন্দ্র সংগীত শিল্পী সাদি মোহম্মদ আর নেই

বিশ্বচ্যাম্পিয়ন মেসির আর্জেন্টিনা

আপডেট: ডিসেম্বর ১৮, ২০২২

  • ফেইসবুক শেয়ার করুন

অবশেষে দীর্ঘ ৩৬ বছরের খরার অবসান। তিন যুগের আক্ষেপ ঘুচিয়ে তৃতীয়বারের মতো ফুটবল বিশ্বকাপে চ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনা। সোনালী ট্রফির মালিকানা বুঝে পেল লিওনেল মেসির আলবিসেলেস্তে বাহিনী। এমন দৃশ্য দেখার তাড়না নিশ্চয় মিটিয়েছেন প্রয়াত ডিয়েগো ম্যারাডোনাও!

Reneta June
লুসেইলে নির্ধারিত ও অতিরিক্ত সময়ের খেলা ৩-৩ গোলে অমীমাংসিত ছিল। ইতিহাসে তৃতীয়বারের মতো বিশ্বকাপের ফাইনাল টাইব্রেকারে গড়ায়। ৪-২ ব্যবধানে জিতে চ্যাম্পিয়ন হয় আর্জেন্টিনা।

প্রথম শটে এমবাপে ও মেসি গোল করেন। ফ্রান্সের কিংসলে কোম্যানের শট ডানদিকে ঝাঁপিয়ে পড়ে ঠেকান এমিলিয়ানো মার্টিনেজ। পরে আর্জেন্টিনার পাওলো দিবালা লক্ষ্যভেদ করেন। অরেলিয়া শুয়ামেনির বাজে শট পোস্টের বাইরে দিয়ে বেরিয়ে গেলে নেচে ওঠে আর্জেন্টিনা, পরে লিয়ান্দ্রো পারেদেস বল জালে জড়ান। ফ্রান্সের রান্ডাল কোলো মুয়ানি চতুর্থ শটে গোল করেন। তারপর গঞ্জালো মন্টিয়েল নিশানাভেদ করলে আর্জেন্টিনা বিশ্বকাপ শিরোপা নিশ্চিত হয়।

রোববার লুসেইল স্টেডিয়ামে শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলতে থাকে আকাশী-নীলরা। শিরোপার মঞ্চে তৃতীয় মিনিটেই সুযোগ তৈরি করে আর্জেন্টিনা। রদ্রিগো ডে পল বল নিয়ে জুলিয়ান আলভারেজের দিকে বাড়ান, শট নেয়ার আগে বল যায় লরিসের হাতে। মিনিট দুয়েক পর আলভারেজের থেকে বল নিয়ে দূরপাল্লার শট নেন অ্যালেক্সিস ম্যাক অ্যালিস্টার। আট মিনিটে বল ফাঁকায় পেয়েও আকাশে উড়িয়ে দেন ডি মারিয়া।

এরপর ১১ মিনিটে বক্সের ভেতর লরিসের সঙ্গে কনুই-সংঘর্ষ হয় ক্রিস্টিয়ান রোমেরোর। ফ্রান্স অধিনায়ক মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। মেডিকেল টিম মাঠে এসে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়, খেলা কিছুক্ষণের জন্য বন্ধ থাকে।

ছয় মিনিট পর লিওনেল মেসির বাড়িয়ে দেয়া বল নেয়া ডি মারিয়া পোস্টের অনেক উপর দিয়ে পাঠিয়ে সুযোগ নষ্ট করেন। প্রথমার্ধে চাপে থাকা এমবাপেরা ২০ মিনিটের মাথায় প্রথম সুযোগ তৈরি করে। জিরুদের হেড যায় জালের অনেকখানি উপর দিয়ে।লিওনেল স্কালোনির একাদশে ফিরে বাম উইং ধরে আক্রমণ চালান ডি মারিয়া। চোট ও ফর্মেশনের কারণে খেলতে না পারার শঙ্কায় থাকা ‘ফাইনালম্যান’ ব্যবধান গড়ে দেন। বল নিয়ে ডি বক্সে ঢুকে গেলে পেছন থেকে পা বাড়িয়ে দেন ডেম্বেলে, ফাউলের বাঁশি বাজান রেফারি। ২৩ মিনিটে মেসিও দলকে এগিয়ে নেন স্পট কিকে। পাঁচ বিশ্বকাপে সবমিলিয়ে যেটি ৩৫ বর্ষী ফুটবলারের ১২তম গোল।

পরের মিনিটে মেসি গড়েন ইতিহাস। পাওলো মালদিনির (২,২১৭ মিনিট) রেকর্ড ভেঙে বিশ্বকাপে সবচেয়ে বেশি সময় খেলা ফুটবলার বনে যান।

খেলার ৩৬ মিনিটে টানা আক্রমণের ফল পায় আর্জেন্টিনা। মাঝমাঠে মেসির পায়ের জাদুতে বল নিয়ে এগিয়ে যায় অ্যালিস্টার। দুর্দান্ত দক্ষতায় বল পাঠান বামপাশে থাকা মারিয়ার কাছে। ‘ফাইনালম্যান’ ভুল করেননি, জোরাল শটে হুগো লরিসকে পরাস্ত করে মাতেন উদযাপনে। প্রথমার্ধে বড় ব্যবধানে এগিয়ে শেষ পর্যন্ত মাঠ ছাড়েন লিওনেল মেসি-ডি মারিয়ারা।

বিরতির পর ৪৯ মিনিটে ডি মারিয়ার অ্যাসিস্টে বল নিয়ে ডান পায়ে শট নেন ডে পল। প্রস্তুত থাকা লরিস বল গ্লাভসবন্দি করেন। তিন মিনিট পর অ্যান্টনিও গ্রিজম্যানের কিক নিলেও বল ধরেন এমিলিয়ানো মার্টিনেজ।

ম্যাচের ৫৯ মিনিটে আক্রমণের পসরা সাজানো ডি মারিয়ার বাড়ানো বলে বাঁ-প্রান্ত থেকে নেয়া আলভারেজের শট ফ্রেঞ্চ গোলরক্ষক প্রতিহত করেন। পরের মিনিটে মেসির শট পোস্টের অনেক বাইরে দিয়ে চলে যায়।

ডি মারিয়া দুরন্ত ছন্দে ছিলেন। শুরু থেকেই নজর কেড়ে যাচ্ছিলেন। বাঁ-প্রান্ত থেকে একের পর এক আক্রমণ তৈরি করেছেন। ৬৪ মিনিটে অবশ্য তাকে বেঞ্চে বসিয়ে রক্ষণের শক্তি বাড়াতে মার্কোস অ্যাকুনাকে মাঠে নামান কোচ লিওনেল স্কালোনি। ৭১ মিনিটের মাথায় কাইলিয়ান এমবাপের নেয়া শট পোস্টের উপর দিয়ে গেলে ফ্রান্সের হতাশা বাড়তে থাকে।

পরে এমবাপের জোড়া গোলে দৃশ্যপট পুরোপুরি বদলে যায়। রান্ডাল কোলো মুয়ানিকে ডি বক্সের ভেতর ফাউল করেন নিকোলাস ওটামেন্ডি। ৮০ মিনিটে স্পট কিক থেকে গোল করে ফ্রেঞ্চ স্ট্রাইকার ব্যবধান কমান।তার মাত্র ৯৭ সেকেন্ড পর মাঝ মাঠ থেকে কিংসলে কোম্যানের বাড়ানো বল নেন মার্কাস থুরাম। তিনি বল এমবাপেকে বাড়ান। ডান পায়ের শটে ২৩ বর্ষী ফুটবলারের শট এমিলিয়ানো মার্টিনেজ ঠেকানোর চেষ্টা করলেও তার আঙুলে লেগে বল জালে জড়ায়।

যোগ করা সময়ের চতুর্থ মিনিটে এডুয়ার্ডো কামাভিঙ্গার পাসে আদ্রিয়েন রাবিওতের নেয়া শট ঠেকান মার্টিনেজ। সপ্তম মিনিটে ডে পলের পাস থেকে বল নেয়া মেসির দুরন্ত শট লাফিয়ে বাঁ-হাতে দারুণভাবে লরিস কর্নারের বিনিময়ে রক্ষা করেন। তাতেই ম্যাচ অতিরিক্ত সময়ে গড়ায়।

পরে ১০২ মিনিটে আলভারেজ ও ডে পলের বদলি হিসেবে লৌতারো মার্টিনেজ এবং লিয়ান্দ্রো পারেদেসকে মাঠে নামান আর্জেন্টাইন কোচ। ১০৫ মিনিটে দুটি গোলের সুযোগ হাতছাড়া করে আর্জেন্টিনা। প্রথমে মেসির পাসে বল পাওয়া মার্টিনেজের শট ডিফেন্ডার ডাওট উপামেকানো পিঠ দিয়ে ব্লক করেন। তারপর গঞ্জালো মন্টিয়েলের শটও প্রতিপক্ষের এক খেলোয়াড় ব্লক করেন।

যোগ করা সময়ের প্রথম মিনিটে অ্যাকুনার বাড়ানো বলে মার্টিনেজ শট লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়।

অতিরিক্ত সময়ের দ্বিতীয়ার্ধে মার্টিনেজের শট প্রতিহত করেছিলেন লরিস। তবে ১০৮ মিনিটে ফিরতি বলে মেসি ডান পায়ে আলতো টোকা দিয়ে নিশানাভেদ করেন। ডাওট উপামেকানো পোস্টের ভেতরে ঢুকে বল ক্লিয়ার করলেও সেটি গোললাইন পেরিয়ে যায়। মেসির গোলে আবারও লিড পায় আর্জেন্টিনা। আর্জেন্টাইন অধিনায়ক পেয়ে যান চলতি আসরে সপ্তম ও বিশ্বকাপে মোট ১৩তম গোলটি।

নাটকের তখনো বাকি ছিল। উপামেকানোর পাসে বল নেয়া এমবাপের শট ব্লক করেন মন্টিয়েল। তবে ডি বক্সের ভেতর বল তার হাতে লাগায় রেফারি পেনাল্টির বাঁশি বাজান। ১১৮ মিনিটে স্পট কিকে ঠাণ্ডা মাথায় বল জালে জড়িয়ে বিশ্বকাপের ফাইনালের ইতিহাসে প্রথম হ্যাটট্রিক করেন এমবাপে। আট গোল করায় তিনিই জিতলেন গোল্ডেন বুট।

যোগ করা সময়ের প্রথম মিনিটে ইব্রাহিমা কোনাতের পাসে বল পান রান্ডাল কোলো মুয়ানি। তার শট ওয়ার্ল্ড ক্লাস ভঙ্গিতে ঠেকান এমিলিয়ানো মার্টিনেজ। খানিক পর লৌতারো মার্টিনেজের হেড অল্পের জন্য জালের দেখা পায়নি। ৩-৩ গোলে ম্যাচ অমীমাংসিত থাকে। টাইব্রেকারে গড়ায় ফাইনাল। সেখানে শেষ হাসি হাসে আর্জেন্টিনা।

  • ফেইসবুক শেয়ার করুন
     
Website Design and Developed By Engineer BD Network