আপডেট: ফেব্রুয়ারি ২৫, ২০২১
বরিশালে সবার জন্য ট্রান্স ফ্যাট মুক্ত নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত আইন করা সহ নয় দফা দফা দাবী আদায়ের লক্ষে বরিশালে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে কনজুমারস্ এসোসিয়েশন অব (ক্যাব) বরিশাল জেলা শাখা।
আজ বৃহস্পতিবার সকাল দশটায় নগরীর সদররোডে এই কর্মসূচি পালিত হয়। ক্যাব বরিশাল জেলা সভাপতি এ্যাড,হিরন কুমার দাশ মিঠুর সভাপতিত্বে মানববন্ধন কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখেন সচেতন নাগরীক কমিটি (সনাক) জেলা সভাপতি অধ্যাপিকা শাহ্ সাজেদা, জাসদ জেলা সভাপতি এ্যাড, আব্দুল হাই মাহাবুব,রান এর নিবাহী পরিচালক রফিকুল আলম,বরিশাল মেট্রোপলিটন প্রেস ক্লাব সভাপতি আলহাজ আবুল কালাম আজাদ, বরিশাল ট্রেড ইউনিয়ন সাধারন সম্পাদক এ্যাড, এক আজাদ, কাজী মিজানুর রহমান ফিরোজ প্রমুখ।
উল্লেখ্য যে, খাদ্য প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানগুলো খাবার সংরক্ষণের সুবিধার্থে এবং ভাজা-পোড়া, প্যাকেটজাত ও বেকারি খাদ্য পণ্যের স্বাদ, ঘ্রাণ এবং খাদ্যের স্থায়ীত্ব বাড়ানোর জন্য সাধারণত ডালডা বা বনস্পতি ব্যবহার করে থাকে। যা মূলত পিএইচও (পারশিয়ালি হাইড্রোজেনটেড অয়েল)। এই ডালডা বা বনস্পতি এমনকি অনেক সময় ভাজা-পোড়া খাবার তৈরিতে একই তেল উচ্চ তাপমাত্রায় বারবার ব্যবহারের কারনেও খাদ্যে ট্রান্স ফ্যাট সৃষ্টি হয়। খাদ্যে উচ্চমাত্রার ট্রান্স ফ্যাট হৃদরোগ ঝুঁকি সৃষ্টি করে এমনকি হৃদস্পন্দন ক্রিয়া বন্ধ বা ব্যহত ঘটায়।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সুপারিশ অনুযায়ী খাদ্যে ট্রান্স ফ্যাটের মাত্রা হতে হবে মোট ফ্যাট বা তেলের ২% বা তারও কম। কিন্তু গবেষণায় দেখা গেছে, ঢাকার শীর্ষস্থানীয় পিএইচও ব্র্যান্ডসমূহের নমুনার ৯২ শতাংশে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সুপারিশকৃত মাত্রার চেয়ে ১০ গুণ পর্যন্ত বেশি ট্রান্সফ্যাট পাওয় গেছে। প্যাকেটজাত বা উম্মুক্ত খাদ্যে ট্রান্স ফ্যাট এর ক্ষতি থেকে ভোক্তাদের সুরক্ষার জন্য বাংলাদেশে কোন আইন বা নীতিমালা নেই। ফলে খাদ্যে মিশে থাকা ট্রান্স ফ্যাট শরীরের রক্তবাহী ধ্বমনীগুলোকে মারাত্মক কোলেস্টরল দিয়ে বন্ধ করে দেয় এবং সারা বিশ্বে প্রতি বছর ২লক্ষ ৫০ হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু ঘটায়।
ভোক্তার দাবিনামা
১. সকল খাদ্য পণ্যে ট্রান্স ফ্যাটের পরিমাণ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অনুসরণীয় মাত্রা অনুযায়ী মোট ফ্যাট বা তেলের সর্বোচ্চ ২% নির্ধারণ করতে হবে;
২. ট্রান্স ফ্যাটের প্রধান উৎস ডালডা/বনস্পতি এর উৎপাদন, আমদানি, বাজারজাতকরণ এবং ব্যবহার নিষিদ্ধ করতে হবে;
৩. খাদ্য পণ্যের মোড়কে ট্রান্স ফ্যাটের পরিমাণ উল্লেখ বাধ্যতামূলক করতে ‘মোড়কাবদ্ধ খাদ্য লেবেলিং প্রবিধানমালা, ২০১৭’ সংশোধন করতে হবে;
৪. ট্রান্স ফ্যাটমুক্ত (২%) খাদ্যপণ্যের জন্য সুনির্দিষ্ট লোগো প্রণয়ন এবং এর ব্যবহার বাধ্যতামূলক করতে হবে;
৫. খাদ্যপণ্যের মোড়কে ট্রান্স ফ্যাট সম্পর্কিত বিভ্রান্তিকর/মিথ্যা তথ্য দিয়ে ভোক্তাদের সাথে প্রতারণা না করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। এক্ষেত্রে মোড়কজাত খাদ্যপণ্যের বিজ্ঞাপন কঠোরভাবে মনিটরিং/পর্যবেক্ষণ করতে হবে;
৬. খাদ্যপণ্যে ট্রান্স ফ্যাটের মাত্রা পরিমাপের জন্য আধুনিক ল্যাবরেটরি/যন্ত্রপাতি স্থাপন এবং প্রয়োজনীয় লোকবল নিয়োগ করতে হবে;
৭. খাদ্যপণ্যে ট্রান্স ফ্যাট পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের জন্য নিয়মিতভাবে মান যাচাই/পরীক্ষা করতে হবে এবং প্রাপ্ত ফলাফল ভোক্তাসাধারণের অবগতির জন্য ওয়েবসাইটে উম্মুক্ত রাখতে হবে;
৮. ট্রান্স ফ্যান্ট নিয়ন্ত্রণ পদক্ষেপ কার্যকরভাবে বাস্তবায়নের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা/কর্মচারীদের সক্ষমতা বৃদ্ধি করতে হবে এবং উদ্বুদ্ধকরণ কার্যক্রম চালু রাখতে হবে;
৯. ট্রান্স ফ্যাটের স্বাস্থ্য ঝুঁকি সম্পর্কে ভোক্তাসাধারণকে সচেতন করতে ব্যাপক প্রচার কার্যক্রম গ্রহণ করতে হবে;