আপডেট: জুলাই ৪, ২০২০
অচলাবস্থর মুখে পড়েছে বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল।
দুই সহকর্মী ওয়ার্ডবয়কে ইন্টার্ন ডাক্তার হোস্টেলে নিয়ে শারীরিক নির্যাতনের ঘটনায় কঠোর বিচারের দাবিতে চতুর্থ শ্রেনীর কর্মচারীদের আল্টিমেটামের পর এবার নারী চিকিৎসককে উত্যক্তকারী ওয়ার্ডবয়দের বিচারের দাবিতে ৭২ ঘন্টার আল্টিমেটাম দিয়েছে ইন্টার্ন চিকিৎসকরা।
আগামী ৭২ ঘন্টার মধ্যে নারী চিকিৎসক উত্যক্তকারীর বিচার না হলে সরাসরি ধর্মঘটের হুমকি দিয়েছেন তারা। অপরদিকে, দুই ওয়ার্ডবয়কে নির্যাতনকারীদের কঠোর বিচার না হলে আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন চতুর্থ শ্রেনীর কর্মচারীরাও।
দুই পক্ষের কঠোর অবস্থানের কারণে করোনকালেও অচলাবস্থার মুখে পড়েছে দক্ষিনাঞ্চলের কোটি মানুষের ভরসাস্থল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল।
যদিও দুই পক্ষের অভিযোগ তদন্ত করে সংশ্লিস্টদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন হাসপাতালের পরিচালক।
শের-ই বাংলা মেডিকেলের করোনা ওয়ার্ডের আইসোলেশনে চিকিৎসাধীন জরুরী বিভাগের ওয়ার্ডবয় মো. বাদশাকে দেখতে গিয়ে গত ২৮ জুন রাতে ডাক্তারের ১৫ নম্বর কক্ষে ডাকাডাকি করেন ওয়ার্ডবয় মো. দিদারুল ইসলাম ও মো. নুরুল ইসলাম।
এতে ক্ষিপ্ত হন ডাক্তারের কক্ষে থাকা এক নারী ইন্টার্ন চিকিৎসক।
এ ঘটনার জের ধরে পরদিন ২৯ জুন রাতে ওয়ার্ডবয় দিদার ও নূরুলকে ইন্টার্ন হোস্টেলে নিয়ে শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগ ওঠে ইন্টার্ন চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে।
এ ঘটনায় ৩০ জুন চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীরা হাসপাতালের পরিচালকের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়ে অভিযুক্তদের বিচার দাবি করেন।
গত বৃহস্পতিবার (২ জুলাই) পরিচালকের কার্যালয় ঘেরাও করে দ্রুত অভিযুক্তদের বিচার না হলে কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেন শেবাচিম শাখা চতুর্থ শ্রেনী কর্মচারী সমিতির সভাপতি মোদাচ্ছের আলী কবির।
এদিকে, গভীর রাতে করোনা ওয়ার্ডে দায়িত্বরত নারী সহকর্মীকে উত্যক্ত করার প্রতিবাদে এবং অভিযুক্ত ওয়ার্ডবয়দের বিচারের দাবিতে আজ শনিবার সকাল ১১টায় হাসপাতালের পরিচালকের কার্যালয় ঘেরাও করেন ইন্টার্ন চিকিৎসকরা।
ওই ঘটনায় পরিচালকের কাছে ইন্টার্ন চিকিৎসকদের দেয়া লিখিত অভিযোগের বিচার আগামী ৭২ ঘন্টার মধ্যে না হলে ধর্মঘট হ কঠোর আন্দোলনের প্রস্তুতির কথা জানান ইন্টার্ন চিকিৎসক ডা. সজল ও ডা. তুলিসহ অন্যান্যরা।
দুই পক্ষের আল্টিমেটামে উত্তেজনা বিরাজ করছে শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। করোনাকালে কোন ধরনের ধর্মঘট কিংবা আন্দোলন হলে হাসপাতালের সার্বিক চিকিৎসা ব্যবস্থায় নেতিবাচক প্রভাব পড়ার আশঙ্কা করছেন সংশ্লিস্টরা।
হাসপাতালের পরিচালক ডা. মো. বাকির হোসেন জানান, ইন্টার্ন চিকিৎসকরা গভীর রাতে করোনা ওয়ার্ডে দায়িত্বরত এক নারী ইন্টার্ন চিকিৎসকে উত্যক্ত করার অভিযোগ করেছেন।
অপরদিকে, চতুর্থ শ্রেনীর কর্মচারীরা তাদের দুই সহকর্মীকে ইন্টার্ন হোস্টেলে নিয়ে শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগ করেছেন। দুই পক্ষের অভিযোগ তদন্তে একটি কমিটি গঠিত হয়েছে।
তদন্ত কমিটির রিপোর্টের ভিত্তিতে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলেন পরিচালক ডা. মো. বাকির হোসেন।