আপডেট: সেপ্টেম্বর ২৪, ২০২১
ডেস্ক রিপোর্ট:
চীনভিত্তিক টেক জায়ান্ট শাওমির বিরুদ্ধে ব্যবহারকারীদের তথ্য পাচারের অভিযোগ উঠেছে। ইউরোপের দেশ লিথুয়ানিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় চীনা এই স্মার্টফোন কেনা থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দিয়েছে। নিরাপত্তা গবেষকদের দাবি, শাওমি তাদের ডিভাইস ব্যবহারকারীদের ব্রাউজিং ডাটা গোপনে চীন, সিঙ্গাপুরে পাচার করে আসছে। এসব তথ্য আলিবাবার একটি সার্ভারে সংরক্ষণ করা হয়। বার্তা সংস্থা রয়টার্সে এমন তথ্য প্রকাশ করেছে।
লিথুয়ানিয়ার এক সরকারি প্রতিবেদনে ডিভাইসগুলোতে আগে থেকেই (বিল্ট-ইন) নজরদারির উপাদান থাকে বলে জানানোর পর এমন সুপারিশ করা হলো। রাষ্ট্র পরিচালিত সাইবার নিরাপত্তা সংস্থা গত মঙ্গলবার জানিয়েছে, চীনা স্মার্টফোন তৈরির প্রতিষ্ঠান শাওমি করপোরেশনের ইউরোপে বাজারজাত করা প্রথম সারির স্মার্টফোনগুলোতে নির্দিষ্ট কিছু শব্দ বা শব্দগুচ্ছ চিহ্নিত করে সেগুলো পরিমার্জনের ক্ষমতা রয়েছে। শব্দগুচ্ছগুলোর মধ্যে রয়েছে ‘ফ্রি তিব্বত’, ‘লং লিভ তাইওয়ান ইনডিপেনডেন্স’ ও ‘ডেমোক্রেসি মুভমেন্ট’।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ইউরোপীয় ইউনিয়ন অঞ্চলের দেশগুলোর জন্য শাওমির মি ১০টি ফাইভজি মডেলের স্মার্টফোনের সফটওয়্যারে সেন্সরশিপের অপশন বন্ধ রাখা হয়েছে। তবে চাইলেই দূর থেকে সেটি সচল করা যায়।
প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, শাওমির ফোনগুলো ব্যবহারকারীর তথ্য এনক্রিপ্ট করে সিঙ্গাপুরের একটি ডেটা সার্ভারে পাঠায়। হুয়াওয়ের পি৪০ ফাইভজি মডেলের স্মার্টফোনেও নিরাপত্তাত্রুটি মিলেছে। তবে আরেক চীনা প্রতিষ্ঠান ওয়ানপ্লাসের স্মার্টফোনে কোনো ত্রুটি পায়নি সাইবার নিরাপত্তা সংস্থাটি।
প্রতিবেদনটি তুলে ধরার সময় লিথুয়ানিয়ার প্রতিরক্ষা উপমন্ত্রী মারগিরিস আবুকেভিসিয়াস সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমাদের পরামর্শ হলো নতুন চীনা স্মার্টফোন না কেনা। আর যেগুলো আগেই কেনা হয়েছে, সেগুলো থেকে যত দ্রুত সম্ভব নিস্তার পাওয়া।’
বৈশ্বিক স্মার্টফোন বাজারে শীর্ষ পাঁচে জায়গা করে নিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। তবে, শাওমির বিরুদ্ধে ডিভাইস ব্যবহারকারীদের তথ্য পাচারের অভিযোগ নতুন নয়। এর আগেও একাধিক ইন্টারনেট নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে শাওমি ব্র্যান্ডের ডিভাইস ব্যবহারের ক্ষেত্রে সতর্ক থাকার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
এদিকে এবিষয়ে রয়টার্সকে পাঠানো এক বিবৃতিতে শাওমির মুখপাত্র বলেছেন, শাওমি কখনো ওয়েব ব্রাউজিং, কল কিংবা অন্য কোনো যোগাযোগের সফটওয়্যার ব্যবহারের মতো গ্রাহকদের ব্যক্তিগত কোনো কাজে প্রতিবন্ধকতা তৈরি বা তা করতে না দেওয়ার মতো কিছু করেনি। ভবিষ্যতেও এ রকম কিছু করবে না।
শাওমি বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহৎ স্মার্টফোন বাজারের ৩০ দশমিক ৬ শতাংশ দখলে নিয়ে শীর্ষ অবস্থানে রয়েছে। গত জানুয়ারি-মার্চ প্রান্তিকে দেশটিতে মোট ১ কোটি ৩ লাখ ইউনিট স্মার্টফোন বিক্রি করেছে প্রতিষ্ঠানটি, যা এক বছর আগের একই প্রান্তিকের চেয়ে ৮ দশমিক ৪ শতাংশ বেশি।