আপডেট: ফেব্রুয়ারি ১৬, ২০২০
ঢাকায় ছুটছে ৯ জেলার রোগী
সাইদুর রহমান পান্থ, বরিশাল ব্যুরো
বরিশালের ৬ জেলাসহ পার্শ্ববর্তী আরো ৩ জেলার চিকিৎসা সেবার ভরসাস্থল বরিশাল শের-ই বাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় (শেবাচিম) হাসপাতাল।
এই হাসপাতালে ৯ কোটি টাকা দিয়ে স্থাপিত এনজিওগ্রাম মেশিনটি প্রায় ৫০ দিন ধরে বিকল হয়ে পড়ে আছে। তাই বাধ্য হয়ে বরিশালের রোগী এখন ছুটতে হচ্ছে ঢাকায়।
যার কারণে ব্যয়বহুল চিকিৎসা ব্যবস্থায় পড়তে হচ্ছে রোগীদের।
শেবাচিম হাসপাতাল কর্তৃপÿের দাবী, একাধিকবার চিঠি দেয়া হয়েছে।
কিন্তু এখনো কোন সুফল পাওয়া যায়নি।
হাসপাতালের কার্ডিওলজি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ২০০৬ সালের দিকে শেবাচিম হাসপাতালে প্রায় ৯ কোটি টাকা ব্যয়ে একটি অত্যাধুনিক এনজিওগ্রাম মেশিন সরবরাহ করে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
শুরুতে মেশিনটি বসানোর স্থান নির্ধারণ নিয়ে জটিলতা দেখা দেয়।
পরে ২০১৩ সালে হাসপাতালের দ্বিতীয় তলার অপারেশন থিয়েটারে মেশিনটি বসানো হয়।
২০১৪ সাল থেকে এই মেশিন দিয়ে রোগীদের সেবা প্রদান করা হতো।
যার কারণে লাখ লাখ টাকার ব্যয় থেকে মুক্তি পেতো হার্টের রোগীরা।
কিন্তু মেশিন নস্ট হওয়ার পর থেকে রোগীদের ছুটতে হচ্ছে রাজধানী ঢাকায়।
বরিশাল নগরীর কাউনিয়া এলাকার বাসিন্দা মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘আমার এক রোগী নিয়ে শেবাচিম হাসপাতালে গিয়েছিলাম। কিন্তু শুনলাম মেশিন নস্ট।
পরে চিকিৎসকের সাথে আলাপ করে আগামী ২৩ ফেব্রæয়ারী ঢাকা আমার রোগীর হার্টে রিং বসানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। কিন্তু ভয় লাগছে কত না কত টাকায় লাগে।
বরিশালে বসে যে নিশ্চয়তা ও অর্থ কম লাগতো। ঢাকায় সেই চিকিৎসা নিতে কয়েকগুন বেশী টাকা লাগবে বলে জানতে পারলাম।’
হাসপাতালের এনজিওগ্রাম মেশিনের টেকনোলজিষ্ট মো: গোলাম মো¯Íফা বলেন, এক-দেড় মাস ধরে মেশিনে ফ্লোরা(ছবি) আসে না।
যার কারণে এনজিওগ্রাম করানো যাচ্ছে না। আমরা আমাদের দপ্তর থেকে হাসপাতাল পরিচালককে চিঠি দিয়ে জানিয়েছি। কিন্তু কোন লাভ হয়নি। এখন রোগীদের ফিরিয়ে দিতে হচ্ছে।
তারা সাধারণত ঢাকায় এই সেবা নিচ্ছেন।
হাসপাতালের কার্ডিওলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ও ইন্টারভেনশনাল কার্ডিওলজিস্ট ডা. এম সালেহ উদ্দীন বলেন, ‘আমরা কয়েক বছর ভালভাবেই সেবা দিয়ে আসছিলাম।
কিন্তু গত দেড় মাস ধরে মেশিনটি বিকল। এছাড়া মেশিনের ওয়ারেন্টির সময়ও পার হয়ে গেছে। যার কারণে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানও কাজ করছে না। এ জন্য আমরা ঢাকায় অনেক চিঠি দিয়েছি।
কিন্তু কোন লাভ হয়নি।’ তিনি বলেন, ‘মেশিনটিতে এখন আর ছবি আসে না। যার কারণে সেবা দেয়াও যাচ্ছে না। এ জন্য ডিজি অফিসে জানানো হয়েছে। এখন তারা মিটিং দিলে সেখানে গিয়ে আমাদের বলতে হবে।’
বরিশাল জনস্বার্থ রক্ষা কমিটির সদস্য সচিব মোঃ মানুওয়ারুল ইসলাম অলি জানান, সরকার দক্ষিণাঞ্চলের দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে ব্যয়বহুল এ চিকিৎসার জন্য ঢাকায় যেতে না হয় এ জন্য এই মেশিনটি স্থাপন করেছেন। কিন্তু মেশিনটি দেড় মাস ধরে বিকল থাকলেও মেরামতের কোন উদ্যোগ পরিলÿিত হচ্ছে না।
এ বিষয়ে সংশিøষ্টদের দৃষ্টি করেছেন তিনি। এ ব্যাপারে বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালের পরিচালক ডা. মো: বাকির হোসেন বলেন, ‘ঢাকায় চিঠি দেয়ার পর প্রকৌশলী এসেছিল।
তারা দেখে গেছে। কিন্তু মেরামত করতে যা দরকার তা তাদের কাছে না থাকার জন্য মেরামত করতে পারে নি। খুব শিঘ্রই মেশিনটি মেরামত করা হবে বলে আশ্বাস দিয়েছে ঢাকা ডিজি অফিস থেকে।’ ##